Views Bangladesh Logo

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিশুরা গভীরতর শিক্ষা সংকটে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সতর্কতা

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

ন্তর্জাতিক সাহায্যের তীব্র হ্রাস বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা শিশুর মুখোমুখি শিক্ষা সংকটকে আরও গভীর করেছে বলে সতর্ক করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে রোহিঙ্গা-নেতৃত্বাধীন স্কুলগুলোকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার অনুরোধ এবং দাতাদের তহবিল প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ। সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নীতি পরিকল্পনায় রোহিঙ্গা শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বেও জোর দিয়েছে অধিকার গোষ্ঠীটি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রধান দাতারা তহবিল বন্ধ করে দেয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মানবিক সংস্থাগুলো পরিচালিত হাজার হাজার শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ৩ জুন বাজেট ঘাটতিতে ইউনিসেফ এই সুবিধাগুলোর অনেকগুলোই স্থগিত রেখেছে। যার ফলে তিন লাখেরও বেশি স্কুল-বয়সী শিশু আনুষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

বেশিরভাগ আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির তহবিল বাতিল হওয়ার সাথে সাথে কেবলমাত্র অবশিষ্ট শিক্ষার বিকল্প হল, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতিষ্ঠিত সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন স্কুল। যদিও উচ্চমানের শিক্ষা প্রদানকারী হিসাবে ব্যাপকভাবে বিবেচিত হলেও স্কুলগুলো কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বা আন্তর্জাতিক সহায়তা পায় না। তারা প্রতি মাসে ৫০ সেন্ট থেকে ৫ ডলারের মধ্যে ছোট টিউশন ফিতে নির্ভরশীল, যা বহন করতে পারে না অনেক পরিবারই।

এইচআরডব্লিউ-এর সহযোগী শিশু অধিকার পরিচালক বিল ভ্যান এসভেল্ড বলেন, ‘আমেরিকা এবং অন্যান্য দাতা সরকার রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা বন্ধ করে দিচ্ছে। কারণ, পূর্ববর্তী বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘদিন ধরে এটি বন্ধ করে রেখেছিল’।

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাকে সমর্থন করতে হবে। অন্যদিকে দাতাদের উচিত, রোহিঙ্গাদের নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করা, যেন হারিয়ে যাওয়া থেকে একটি প্রজন্মকে রক্ষা করা যায়’।

এইচআরডব্লিউ জানায়, ৭৫ জনেরও বেশি লোকের সাথে সাক্ষাৎকারে, যাদের মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাহায্যকর্মীও রয়েছেন, শিক্ষার বিকল্পগুলো অদৃশ্য হয়ে যাওয়ায় শিশুদের মুখোমুখি ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে কমপক্ষে ৫১টি শিশু অপহরণের খবর পাওয়া গেছে, যা পাচার, জোরপূর্বক শ্রম এবং অন্য শোষণের শঙ্কাও তৈরি করেছে।

যদিও অনেক সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন স্কুলে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করা রোহিঙ্গারা কর্মরত, তবে আনুষ্ঠানিক সনদের অভাব তাদের ক্ষেত্রেও বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা করছে, উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা শেষ করলেও তাদের যোগ্যতা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাবে না।

রোহিঙ্গা শিশুদের বর্তমানে শিবিরের বাইরের স্কুলে ভর্তি নিষিদ্ধ। এইচআরডব্লিউ যুক্তি দেয়, এই নীতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন, যা বৈষম্য ছাড়াই শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিশ্চিত করে।

ভ্যান এসভেল্ড বলেন, ‘শিক্ষা শরণার্থী শিশুদের জীবনরেখা। এখন সময় এসেছে, বাংলাদেশ এবং তার অংশীদারদের সেই অধিকারকে সমর্থন করা, বাধা দেয়া নয়’।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ