রথযাত্রা উৎসব শুরু শুক্রবার
রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন মন্দির থেকে শুক্রবার (২৭ জুন) শুরু হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা। শনিবার (৫ জুলাই) পর্যন্ত নয়দিনের এই বর্ণাঢ্য ধর্মীয় উৎসবের আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), বাংলাদেশ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, জগন্নাথ দেব হলেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ ঘটে এবং জীবরূপে আর জন্ম নিতে হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই ভক্তরা জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রার প্রতিকৃতি রথে স্থাপন করে টেনে নিয়ে যান এক মন্দির থেকে অন্য মন্দিরে। বছরজুড়ে রথযাত্রা উৎসবের অপেক্ষায় থাকেন ভক্তরা।
উদ্বোধনী দিন সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত বিশ্বশান্তি কামনায় ১০৮টি অগ্নিহোত্র যজ্ঞ দিয়ে শুরু হবে উৎসব। বেলা ১২টায় ভাগবতীয় আলোচনা করবেন চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী।
দুপুর আড়াইটায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন হবে। বিকেল তিনটায় রথযাত্রাটি স্বামীবাগ আশ্রম থেকে বের হয়ে জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা মোড়, বায়তুল মোকাররমের উত্তর পাশ, পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব, কদম ফোয়ারা, হাইকোর্ট মাজার, দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল ও পলাশী মোড় হয়ে গন্তব্যস্থল ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে।
সন্ধ্যা আরতির পর রাত আটটায় ইসকন মন্দিরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৃত্যনাট্য পরিবেশিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে স্বামীবাগ মন্দিরে মতবিনিময় সভায় ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী জানান, ভারতের পুরীর পর ঢাকার রথযাত্রা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রায় পরিণত হয়েছে। দেশে প্রতি বছর ইসকনের আয়োজনে ১২৮টিরও বেশি রথযাত্রা হয়, যা দেশের ইতিহাসে অভূতপূর্ব। এছাড়াও আয়োজনে রথযাত্রা করছে বিভিন্ন মন্দির।
তিনি জানান, প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে থাকছে, শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত পাঠ, জগন্নাথ লীলামৃত পাঠ, রথযাত্রার মাহাত্ম্য বিষয়ক আলোচনা, সন্ধ্যা-আরতি, ভজন-কীর্তন মেলা ও বৈদিক নাটক।
উৎসবের শেষ দিন ৫ জুলাই ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে বের হবে উল্টো রথযাত্রা, যা ফের স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে গিয়ে পৌঁছাবে। এদিন রয়েছে ড. তাপসী ঘোষের পদাবলী কীর্তন ও আলোচনা সভা।
উৎসব ঘিরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবে মেলা। দূর-দূরান্ত থেকে আসবেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।
রথযাত্রায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান আয়োজকরা। পুলিশের পাশাপাশি ইসকনের নিজস্ব প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত থাকবে।
সনাতনসহ সব ধর্মের মানুষের প্রতি উৎসব ও শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, রথযাত্রা এখন সর্বজনীন উৎসব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব ধরনের সহযোগিতা করছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকারও।
মতবিনিময় সভায় আরও ছিলেন ইসকনের কোষাধ্যক্ষ জ্যোতিশ্বর গৌর দাস ব্রহ্মচারী, বিমলা প্রসাদ দাস, ঋষিকেশ গৌরাঙ্গ দাস, নন্দন আচার্য দাস, শুভ নিতাই দাস এবং জয় মহাপ্রভু দাস।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে