ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস আজ
ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডির ১৯তম বার্ষিকী আজ (মঙ্গলবার), যা বাংলাদেশের পরিবেশ ও মানবাধিকার আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ২০০৬ সালের এই দিনে যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির উন্মুক্ত খননপদ্ধতিতে কয়লা খনির প্রকল্পের বিরোধিতা করা বিক্ষোভকারীদের উপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিবর্ষণে তিনজন বিক্ষোভকারী আমিন, সালেকিন ও তারিকুল নিহত এবং ২৫০ জনের বেশি আহত হন।
জাতীয় তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির আয়োজনে ফুলবাড়ীতে এই বিক্ষোভের লক্ষ্য ছিল বিতর্কিত খনি প্রকল্প বন্ধ করা। ফুলবাড়ী ও আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর অঞ্চলজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে ২০০৬ সালের ৩০ আগস্ট ‘ফুলবাড়ী চুক্তি’ স্বাক্ষর করে সরকার, যাতে প্রকল্প বাতিল ও বিক্ষোভকারীদের দাবি পূরণের অঙ্গীকার করা হয়।
ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডির স্মরণে এবং চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, যার মধ্যে ছিল সমাবেশ, কালো ব্যাজ পরা, শোক র্যালি, পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল। এই কর্মসূচিগুলো আয়োজন করে জাতীয় কমিটি, স্থানীয় পেশাজীবী সংগঠন এবং ফুলবাড়ীর বাসিন্দারা।
প্রায় দুই দশক পেরিয়ে গেলেও স্থানীয়রা দাবি করছেন, ছয় দফা চুক্তি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তারা আরও অভিযোগ করেন, সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের পরিবর্তে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চুক্তি বাস্তবায়নে ব্যর্থতার সমালোচনা করে ফুলবাড়ী সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র মুরাতুজা সরকার মানিক বলেন, ‘২০০৬ সালের প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ হয়নি। বরং ফুলবাড়ীর মানুষের বিরুদ্ধে নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়ে জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং এশিয়া এনার্জির স্বার্থে কাজ করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাই।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে