দাবিতে অনড় পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীরা, শহীদ মিনারে বৃষ্টির মধ্যেও চলছে আন্দোলন
সাত দফা দাবি আদায়ে টানা নয়দিন ধরে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পিছু হটবেন না।
চলমান এই অবস্থান কর্মসূচি বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বৃষ্টির মধ্যেও থেমে থাকেনি। পলিথিন ও ত্রিপলের তাঁবুতে অবস্থান করে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন তারা।
দেশের গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এই কর্মীদের দাবি, তাদের এই আন্দোলন দীর্ঘদিনের বঞ্চনার প্রতিবাদ।
তারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এবং এর আওতাধীন ৮০টি সমিতিকে একীভূত করার দাবি জানিয়ে আসছেন। সেই সঙ্গে অভিন্ন চাকরি বিধিমালা বাস্তবায়ন, চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের স্থায়ীকরণসহ মোট সাতটি দাবি রয়েছে তাদের।
পল্লীবিদ্যুৎকর্মীদের অভিযোগ, দাবি আদায়ে চলতি বছরের শুরু থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। তবে দাবি মানা তো দূরের কথা, উল্টো আন্দোলনে অংশ নেয়ায় তাদের অনেকে চাকরি হারিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এ পর্যন্ত ২৯ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, ৪০ জনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ছয় হাজারেরও বেশি কর্মীকে নিজ এলাকা থেকে দূরে বদলি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি অন্তত ১৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, যাদের ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়ে পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
চাকরি হারানো ও হয়রানির ভয়ে অনেক কর্মী এখন গাঢাকা দিয়ে আছেন। আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই ভয়ের পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে লাইনে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
দেশের পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিগুলো তিন কোটি ৬৮ লাখ গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়, যা মোট গ্রাহকের প্রায় ৭৬ শতাংশ। প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর শ্রমেই এই বিশাল সেবা কার্যক্রম চালু থাকে। তাই এই আন্দোলন গ্রামীণ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরাও।
পল্লীবিদ্যুৎ কর্মীদের এই অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, হেফাজতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে