Views Bangladesh Logo

গুম প্রতিরোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি

দেশে গুমের মতো গুরুতর অপরাধ রোধ ও সংশ্লিষ্ট অভিযোগের বিচার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রপতি ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছেন। এতে গুমের ফলে কারও মৃত্যুর ঘটনা প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে যাবজ্জীবনসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ অধ্যাদেশটির গেজেট প্রকাশ করে। এর আগে গত ৬ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদ খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, গুম সংক্রান্ত অভিযোগের বিচার করতে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দুটি স্তরে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। আইনের আওতায় আসা অপরাধগুলো অজামিনযোগ্য, এবং এসব মামলায় আপস বা সমঝোতার সুযোগ থাকবে না।

নথিতে বলা হয়েছে—কোনো সরকারি কর্মচারী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য গ্রেপ্তার, আটক, অপহরণ বা স্বাধীনতা হরণ করার পর তা অস্বীকার করলে, অথবা ব্যক্তির অবস্থান বা পরিণতি গোপন রাখলে—এটি গুম হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যাবজ্জীবন বা সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

গুমের পর কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হলে, অথবা গুমের পাঁচ বছর পরও জীবিত বা মৃত কোনো অবস্থায় তাকে খুঁজে না পাওয়া গেলে, দায়ী ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া যেতে পারে।

গুম আড়াল করতে প্রমাণ নষ্ট করা, অথবা গোপন আটককেন্দ্র নির্মাণ, ব্যবহার বা স্থাপনের মতো কর্মকাণ্ডের জন্য সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী শুধু অধস্তন নয়, বরং বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কমান্ডার বা দলনেতাদের প্রতিও কঠোর দায় আরোপ করা হয়েছে। তারা যদি আদেশ, অনুমতি, সম্মতি, প্ররোচনা দেন বা নিজে জড়িত থাকেন, তাহলে মূল অপরাধের সমান শাস্তি পেতে হবে। এমনকি তদারকির ঘাটতি বা অবহেলার কারণে অধস্তনদের মাধ্যমে অপরাধ ঘটলেও ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দায়ী হবেন।

গ্রেপ্তারের পর কোনো ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার আগ পর্যন্ত ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ তার অবস্থান গোপন রাখা যেতে পারে—অধ্যাদেশে এমন বিধানও রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক থাকলে, তার অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম শেষ করার সুযোগও এতে রাখা হয়েছে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ