গত ১৫ বছরে দেশে প্রকৃত অর্থে কোনো নির্বাচন হয়নি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাস্তব অর্থে গত ১৫ বছরে দেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছিল ২০০৮ সালে। ফলে দেশের বড় একটি জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে যাদের বয়স ৩০ বছরের নিচে, তারা কখনো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে ভোলা শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘ভোটের গাড়ি’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং সরকার আশা করছে, একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে—দেশের মানুষ যেন প্রকৃত অর্থে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দেখতে পায় এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়। সরকার কোনো দলের পক্ষে কাজ করছে না বলেও তিনি স্পষ্ট করেন।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন সামনে উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, এরপরই জানা যাবে কারা কারা নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে।
জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থী ও জনগণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে পরিবর্তন এসেছে, তার ভিত্তিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এই তালিকা প্রথমবারের মতো জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে, যাতে তারা মতামত জানাতে পারেন।
তিনি জানান, এসব সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আলাদাভাবে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ চাইলে ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত দিতে পারবেন। জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকার প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বাস্তবায়ন করবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনাই বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য, যাতে নাগরিক অধিকার কেউ কেড়ে নিতে না পারে। আগামী সংসদের দায়িত্ব হবে এসব বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখা।
তিনি বলেন, ‘ভোটের গাড়ি’র মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে ভোটের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা এবং ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে উৎসাহিত করা।
অনুষ্ঠানে ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার। এ ছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ‘ভোটের গাড়ি’ কর্মসূচির আওতায় আগামী দুই দিন ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে