দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য হয়নি: আলী রীয়াজ
সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ও জোট দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রতিষ্ঠায় সমর্থন দিলেও এর গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ঐকমত্য হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার কমিশনকে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কমিশনের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের ড. রীয়াজ বলেন, যেহেতু রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলো এ বিষয়ে একাধিকবার আলোচনার পরেও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি, সেহেতু দল এবং জোটগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার বিষয়ে নিজেদের মধ্যে এবং পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ-আলোচনার পর আগামী সপ্তাহে একটি অবস্থানে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দেশের সংস্কার বিষয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের ১৪তম দিনের এই আলোচনায় অংশ নেন বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এবি পার্টি ও লেবার পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। নারী প্রতিনিধিত্ব, সংবিধান সংশোধন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা- এই দুই বিষয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরেন তারা।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, প্রথম পর্যায়ের আলোচনায়ও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা গঠনে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। তবে, গঠনের প্রক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে মতভেদ রয়েই গেছে। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বলছে, ভোটের সংখ্যানুপাতে যেন উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়। অন্যদিকে আসনের সংখ্যানুপাতেও উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব আছে।
সংলাপে ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোট লাগবে বলেও জানান আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো মতভিন্নতা নেই বলে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনে গণভোটের কথা বলা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি।
আলোচনায় সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে কমিশনের এই সহ সভাপতি বলেন, যদি উচ্চকক্ষ গঠিত না হয় বা উচ্চকক্ষ হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের সংশোধনের জন্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের প্রয়োজন হবে। তবে, সুনির্দিষ্ট কিছু অনুচ্ছেদ যেমন- প্রস্তাবনা, রাষ্ট্রের মূলনীতি, অনুচ্ছেদ ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিষয়ক ৫৮খ, ৫৮গ, ৫৮ঘ এবং ৫৮ঙ অনুচ্ছেদের দ্বারা সংবিধানে যুক্ত হলে তা সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে