অর্থপাচার প্রতিরোধে অগ্রগতি হলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি: টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, অর্থপাচার কমেছে কি না বলা যাবে না, তবে প্রতিরোধক কিছু ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অর্থপাচারের অন্যতম মাধ্যম ব্যাংকিং সেক্টরে কিছু সংস্কার হয়েছে। আগে ঢালাওভাবে ঋণ নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে পাচার করা হতো, সেই সুযোগ এখন আর নেই। ব্যাংকিং সেক্টরের যেসব ব্যক্তি এ প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন, তাদের অনেকে বিদেশে অবস্থান করছেন অথবা বিচারাধীন আছেন। ফলে তাদের ভূমিকা এখন কার্যত নেই। যদিও নতুন কোনো চক্র তৈরি হয়নি, সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতে সংস্কার হয়েছে এবং অর্থপাচারের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিদেশে কর্মরত অভিবাসী শ্রমিকদের বৈদেশিক আয় সরাসরি ব্যাংকিং চ্যানেলে আসার কথা থাকলেও হুন্ডির মাধ্যমে তা পাচার হতো। এখন এ প্রক্রিয়া মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, যদিও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
তিনি আরও জানান, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে চালান জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থপাচার হচ্ছে। তবে এ খাতে এখনো মৌলিক সংস্কার হয়নি। কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু সংস্কার কমিশনের দেওয়া সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে ধীরে ধীরে এ খাতও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
অর্থপাচার প্রতিরোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একবার পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত আনা অত্যন্ত কঠিন। বিদেশের আদালতে টাকা পাচারের প্রমাণ হাজির করতে হয়, যা একটি দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া। শুধু সম্পদ ‘ফ্রিজ’ হওয়া মানেই বাংলাদেশ সেই অর্থ ফিরে পাবে-এমনটি নয়।
তিনি আরও বলেন, পাচারকারীরা যদি বিদেশে বিনিয়োগ করার সুযোগ না পেতেন, তাহলে লন্ডন, কানাডা বা দুবাইয়ে টাকা লগ্নি করতে পারতেন না। তাই বাইরে অর্থ পাঠানোর সুযোগ বন্ধ করতে হবে। এ জন্য বিদ্যমান আইন আরও শক্তভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং প্রতিরোধের ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। তাহলেই অর্থপাচার রোধ সম্ভব হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে