ভাঙ্গা থানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, প্রধান আসামি  নিক্সন চৌধুরী

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনকে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজাদুজ্জামান মামলাটি করেছেন। মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মিয়াকে করা হয়েছে মামলার ২ নম্বর আসামি। এর আগে আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিক মিয়াকে দ্রুত বিচার আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শামছুল আজম। পুলিশের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, থানায় হামলা ও ভাঙচুরে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন এক গেজেটে প্রকাশ করে, ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের অধীন আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নগুলো কেটে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভাঙ্গাবাসী ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজানুর রহমানের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা তিন দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেন।

কিন্তু সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আন্দোলনকারীরা সোমবার থেকে আবার তিন দিন সকাল-বিকেল মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। রোববার প্রথম দিনে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশাপাশি রাজবাড়ী-ভাঙ্গা ও ঢাকা-খুলনা রেলপথও অবরোধ করা হয়। এতে ভাঙ্গার হামিরদী, ভাঙ্গা জংশন ও রাজবাড়ীতে তিনটি ট্রেন আটকা পড়ে এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে।

এই পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রোববার কঠোরতা চালানোর ঘোষণা দেন। একই দিনে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে দেড়শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

পরবর্তী দিনে তৃতীয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আন্দোলনকারীরা ভাঙ্গা থানা, উপজেলা কমপ্লেক্স, হাইওয়ে থানা ও বিভিন্ন সরকারি অফিসে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল ইসলাম মোল্ল্যা জানিয়েছেন, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।