ফের কলমবিরতিতে যাচ্ছেন এনবিআর কর্মকর্তারা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণের দাবিতে আবারও কলমবিরতিতে যাচ্ছেন এনবিআরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আগামী সোমবার, ২৩ জুন থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে বলে শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন 'এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ'-এর নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার (২২ জুন) জাতীয় বাজেট পাসের কার্যক্রম রয়েছে বিধায় সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকার সব এনবিআর দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি পালন করা হবে। একই সময়ে দেশের অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তারা নিজ নিজ দপ্তরে একই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

এ সময় আরও জানানো হয়, এনবিআরকে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগে বিভক্ত করার সরকারের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এর আগেও কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করেছিলেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তীতে জানানো হয়, এনবিআর বিলুপ্ত হচ্ছে না; বরং এটিকে স্বাধীন ও বিশেষায়িত বিভাগে উন্নীত করা হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ মে কলমবিরতি প্রত্যাহার করা হলেও চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে সংগঠনটি অসহযোগিতার ঘোষণা দেয়।

এনবিআরের কাঠামোগত সংস্কার প্রক্রিয়া সমন্বয়ের জন্য ১৯ জুন সরকার একটি ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে, যার সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এনবিআর সদস্য (কর, লিগ্যাল ও এনফোর্সমেন্ট) ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকীকে। তবে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের অভিযোগ, এই কমিটিতে তাদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি এবং এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনাও করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার এবং মহাসচিব অতিরিক্ত কর কমিশনার মিস সেহেলা সিদ্দিকা উপস্থিত ছিলেন। তারা অভিযোগ করেন, সংস্কার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করায় অনেক কর্মকর্তাকে প্রতিহিংসামূলক বদলি ও হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে। এছাড়া শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে রাজস্ব ভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে উসকানিমূলক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এনবিআর চেয়ারম্যান এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি রাজস্ব সংস্কারকে বাধাগ্রস্ত করছেন এবং সরকারকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন।

পরিষদের দাবি, এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে কাঠামোগত সংস্কার কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাকে দ্রুত অপসারণ, এনবিআর গঠিত কমিটিতে সংগঠনের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হয়রানি ও বদলি বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।

সংগঠনটি আরও দাবি করেছে, এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান পলাতক সরকারপন্থী আমলাদের তালিকায়ও আছেন এবং তিনি রাজস্ব সংস্কার প্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাধাগ্রস্ত করছেন।

এনবিআরের অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং সরকারের রাজস্ব সংস্কার পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই বিরোধ কীভাবে সমাধান করা হয় তার ওপর।