দেশজুড়ে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু ১২ অক্টোবর
বাংলাদেশের প্রায় ৫ কোটি শিশুকে লক্ষ্য করে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপী দেশজুড়ে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি-২০২৫ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. মো. সাইদুর রহমান জানান, এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো শিশুদের মধ্যে টাইফয়েডজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা।
এই প্রচারণার আওতায় প্রি-প্রাইমারি (প্লে, নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন) থেকে নবম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থী, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ স্কুল থেকে টিকা নিতে পারবে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের নিচে যেসব শিশুরা স্কুলে ভর্তি হয়নি, তারা তাদের নিজ নিজ এলাকার ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে এই টিকা নিতে পারবে।
ডা. রহমান জানান, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, কওমি মাদ্রাসা, স্কাউটস ও গার্লস গাইডের মতো সংস্থাগুলোর সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে।
এ ছাড়াও সুবিধাবঞ্চিত শিশু, বেদে সম্প্রদায়, চা বাগানের শিশু, এতিম, উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোর শিশু, পথশিশু এবং যৌনপল্লীর শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইপিআইয়ের মাধ্যমে দেয়া এই টিকাটি ডব্লিউএইচও অনুমোদিত এবং সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ। এতে উন্নত রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রোটিন এবং চিনি উভয় উপাদানই রয়েছে।
ডা. রহমান নিশ্চিত করেন যে, যেকোনো টিকা অনুমোদনের আগে বাংলাদেশ সরকার তার শতভাগ নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। এই টিকাটি সৌদি হালাল সেন্টার কর্তৃক হালাল সনদপ্রাপ্ত এবং পাকিস্তান, নেপাল এবং ভারতের মুম্বাইয়ে সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, যেখানে শিশুদের মধ্যে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
তিনি উল্লেখ করেন, টিকা নেয়ার পরে সাময়িক ব্যথা, হালকা জ্বর বা ক্লান্তি হতে পারে। তবে ভয়জনিত কারণে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া সম্ভব, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘ম্যাস সাইকোজেনিক ইলনেস’ নামে পরিচিত। এটি টিকার কারণে হয় না।
অভিভাবকরা ‘Vaxepi.gov.bd’ ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের সন্তানের ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। ৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইতোমধ্যে ১ কোটি ৬৮ লাখ শিশুর নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে এবং যাদের জন্ম নিবন্ধন নেই, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেয়ার সুযোগ থাকবে।
ডা. সাইদুর রহমান জানান, ‘ইপিআই’ বাংলাদেশের জন্য অন্যতম সফল জনস্বাস্থ্য কর্মসূচি। এ কর্মসূচির আওতায় প্রতি বছর প্রায় ৪২ লাখ শিশুকে এই টিকা দেয়া হয়, যেটি বছরে আনুমানিক ১ লাখ শিশুর জীবন রক্ষা করতে সক্ষম।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে