প্রশ্ন করা আমার কাজ, আমি তা চালিয়ে যাব: আনিস আলমগীর
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা একটি মামলায় সিনিয়র সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন ঢাকা আদালত।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।
রিমান্ড শুনানির সময় আনিস আলমগীর আদালতকে বলেন, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী তাকে তাদের দাসে পরিণত করতে চায়, কিন্তু তিনি তা মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, ক্ষমতাকে প্রশ্ন করা একজন সাংবাদিক হিসেবে তার দায়িত্ব এবং তিনি তা অব্যাহত রাখবেন।
এর আগে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক মুনিরুজ্জামান এ আবেদন দাখিল করেন।
বিকেল ৫টার দিকে সাদা রঙের একটি মেট্রোপলিটন পুলিশের গাড়িতে করে আনিস আলমগীরকে আদালতে আনা হয় এবং কাঠগড়ায় তোলার আগে হেফাজতে রাখা হয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তার পরনে ছিল বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হাতে হ্যান্ডকাফ এবং মাথায় হেলমেট। হেলমেট খোলার পর তিনি স্বল্প সময়ের জন্য তার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তাকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, সাংবাদিকতার আড়ালে অভিযুক্ত ব্যক্তি ষড়যন্ত্রমূলক শক্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পক্ষে আইনজীবী নাজনীন সুলতানা বলেন, আনিস আলমগীর একজন খ্যাতিমান ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সাংবাদিক। তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধসহ বিভিন্ন বড় সংঘাত কাভার করেছেন। তিনি বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাই সাম্প্রতিক গণআন্দোলনের মূল বিষয় এবং তিনি রিমান্ডের আবেদন প্রত্যাখ্যানের দাবি জানান।
আদালতের অনুমতি নিয়ে আনিস আলমগীর নিজেও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা—উভয় সরকারের সময়েই তিনি ক্ষমতাকে প্রশ্ন করেছেন এবং ভবিষ্যতেও তা করে যাবেন। তিনি মামলাটিকে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত আনিস আলমগীরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে