চালু হলো ‘মওলানা ভাসানী’ সেতু
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত হরিপুর–চিলমারী ‘মওলানা ভাসানী’ সেতুর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সেতুর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এলজিইডির কর্মকর্তাসহ সেতু নির্মাণ–সংশ্লিষ্টরা। উদ্বোধনের পর মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় এবং ফিতা কেটে সেতু উন্মুক্ত করা হয়। এসময় এলাকাবাসীর উচ্ছ্বাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।
২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নানা জটিলতা ও একাধিকবার তারিখ পরিবর্তনের পর দীর্ঘ ১১ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে চালু হলো বহুল প্রতীক্ষিত এ সেতু।
১৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৬ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার কাঠামোর সেতুটি এলজিইডির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌদি সরকারের অর্থায়ন ও চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে সেতুটি নির্মিত হয়। সেতুর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক্সেস সড়ক, ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু।
এটি চালু হওয়ায় গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষি ও শিল্পপণ্য পরিবহনে খরচ কমবে, বাড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের সম্ভাবনা। এছাড়া ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরের দূরত্ব কমবে ৪০–১০০ কিলোমিটার।
তবে সেতুর নামকরণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, মুক্তিযোদ্ধা ও সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা শরিতুল্যাহ মাস্টারের নামে নামকরণ করা উচিত ছিল। ১৯৯৫ সাল থেকে তিনি আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। স্থানীয়রা মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়ে এ দাবি তুললেও সরকার গত ১০ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করে সেতুর নামকরণ করে ‘মওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।
সব বিতর্ক ছাপিয়ে, উত্তরাঞ্চলের মানুষ এখন উচ্ছ্বসিত। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ তাদের জীবনে যোগাযোগ ও অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিল।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে