মহানায়ক উত্তম কুমারের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী আজ
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা মহানায়ক উত্তম কুমারের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯২৬ সালে কলকাতার আহিরিটোলায় অরুণকুমার চ্যাটার্জি নামে জন্ম নেওয়া উত্তম কুমারের ‘মহানায়ক’ হয়ে ওঠার যাত্রা ছিল অধ্যবসায় ও আবেগে পরিপূর্ণ।
চলচ্চিত্র জগতে তার শুরুর দিনগুলো ছিল বেশ কঠিন। ১৯৪৭ সালের ‘মায়াডোর’ চলচ্চিত্রে এবং ১৯৪৮ সালের ‘দৃষ্টিদান’ ছবিতে অভিনয় করলেও তেমন সাড়া পাননি। ১৯৪৯ সালে 'কামনা' ছবিতে ছবি রায়ের বিপরীতে প্রথমবার নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন, তবে ছবিটি বক্স অফিসে সফল হয়নি।
পরবর্তী আট বছরে তিনি আটটি ছবিতে অভিনয় করেন, যেগুলো বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়। এই কারণে তিনি ‘ফ্লপ মাস্টার’ নামেও পরিচিত হন। তবে ১৯৫৩ সালে 'সাড়ে চুয়াত্তর' মুক্তির মাধ্যমে তাঁর ভাগ্য ঘুরে যায় এবং শুরু হয় তাঁর তারকাখ্যাতির যাত্রা।
১৯৫৪ সালে উত্তম কুমার ১৪টি ছবিতে অভিনয় করেন, যার বেশিরভাগই সফল হয় এবং তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রধান নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের সঙ্গে তাঁর জুটি কিংবদন্তি হয়ে ওঠে। তাদের জুটি দর্শকদের মুগ্ধ করে এবং চলচ্চিত্র জগতের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
রোমান্টিক নায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তার বাইরে, উত্তম কুমার ছিলেন বহুমুখী ও দর্শকের কাছে আপনজন—একজন স্নেহশীল ছেলে, দায়িত্বশীল ভাই এবং কোটি ভক্তের প্রিয় মানুষ। তাঁর সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারে তিনি প্রায় ২০৯টি বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, যেগুলোর অনেকগুলোই সমালোচকপ্রশংসিত ও ব্যবসায়িকভাবে সফল ছিল।
তাঁর স্মরণীয় ছবির মধ্যে রয়েছে—পথে হলো দেরি, শিল্পী, সাগরিকা, দেয়া নেয়া, সপ্তপদী, অগ্নিপরীক্ষা, শহরের ইতিকথা, পৃথিবী আমায় চায়, নায়ক এবং চিড়িয়াখানা। বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান আজও অতুলনীয়।
১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই মাত্র ৫৩ বছর বয়সে উত্তম কুমার মৃত্যুবরণ করেন। তবে তাঁর উত্তরাধিকার আজও প্রজন্মের পর প্রজন্মের অভিনেতা ও সিনেমাপ্রেমীদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে