শুভ মহালয়ায় দুর্গাপূজার ক্ষণগণনা শুরু
শুভ মহালয়ায় উদযাপিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনালগ্ন। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে চণ্ডীপাঠে মর্ত্যে দেবী দুর্গাকে আহ্বান জানিয়েছেন ভক্ত-পুণ্যার্থীরা। পিতৃপক্ষের সমাপ্তিতে দেবীপক্ষে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার ক্ষণগণনাও।
পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবের সম্মিলিত শক্তিতে সৃষ্টি হওয়া মহামায়া সিংহবাহিনী রূপে অস্ত্রসজ্জিত হয়ে নয়দিনের যুদ্ধে মহিষাসুরকে বধ করেন। তাই মহালয়া দুর্গোৎসবের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা বোধন ও সন্ধিপূজার সঙ্গে মিলিয়ে পূর্ণতা পায়।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলেও দুর্গাপূজার আনন্দময় আবেদন সর্বজনীন। তাই তো, দেবীর আগমনধ্বনিতে পাঁচদিনের উৎসবে মাতোয়ারা হওয়ার অপেক্ষায় সারা দেশ।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর ) মন্দিরে মন্দিরে ও পূজামণ্ডপে চলছে চণ্ডীপাঠ, ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা-অর্চনা। পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ শ্রাদ্ধ করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তাদের বিশ্বাস, পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসেন এবং তাদের আত্মার মঙ্গল কামনায় অন্ন-তিল-জল উৎসর্গ করা হয়।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দিনভর রয়েছে মহালয়ার সবচেয়ে বড় আয়োজন। সেখানে ঢাক-কাঁসা ও শঙ্খ বাজিয়ে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর পর মঙ্গলঘট স্থাপন করা হয়েছে। তাতে ফুল, তুলসী ও বেলপাতা দিয়ে পূজা শেষে অন্য আনুষ্ঠানিকতায় মেতেছেন হাজারো মানুষ।
দুপুর দুইটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের নিচতলায় মহালয়ার আচার-অনুষ্ঠান উদযাপন করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।
২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজায় শুরু দুর্গাপূজা শেষ হবে ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে। সেদিন সন্ধ্যায় দেবী দুর্গাকে বিসর্জনে দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হবে।
এবার দেবী দুর্গার আগমন গজে বা হাতির পিঠে চড়ে হবে। গজে আগমন বা গমন হলে বসুন্ধরা শস্য শ্যামলা হয়। দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন দোলায় চেপে। আর দোলায় দেবীর গমনকে মহামারী বা মড়কের ইঙ্গিত ধরা হয়।
এ বছর দেশজুড়ে ৩৩ হাজার ৫৭৬টি মণ্ডপে পূজা হবে, যা গতবারের চেয়ে বেশি। এর মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ২৫৮টি মণ্ডপ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে