লম্বা ছুটিতেও আশানুরূপ পর্যটক নেই বান্দরবানে
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরও ঈদের লম্বা ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক আসেননি পর্যটনস্পট সমৃদ্ধ বান্দরবানে। জেলার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রুমও ভরেনি ঈদের ছুটির দিনগুলোতে।
তারপরও স্থানীয় ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের দর্শণার্থীদের পদচারণায় মুখর এখন পর্যটন স্পটগুলো। পরিবার-পরিজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের নিয়েও ঘুরতে এসেছেন অনেকে। তারা বলছেন, 'ভ্রমণের জন্য বান্দরবান অসাধারণ জায়গা। নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সার্বিক পরিস্থিতিও পর্যটকবান্ধব'।
সোমবার (৯ জুন) ও রোববার (৮ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, পাহাড়ি প্রকৃতি এবং শৈল্পিক ছোয়ায় সাজানো নীল দিগন্ত, নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা লেক, প্রান্তিক লেক, শৈলপ্রপাত, বুড্ডিস্ট টেম্পল, বাংলার দার্জিলিং খ্যাত চিম্বুক পাহাড় এবং নীলগিরি সড়কের ডাবল হেন্ডস ভিউ ও টাইটানিক ভিউ পয়েন্টসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। অসংখ্য ঝর্নাধারা, রহস্যে ঘেরা দেবতাখুম, আলীর সুড়ঙ্গের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দূর-দূরান্তের দর্শনীয় স্থানগুলোতেও বসেছে পর্যটকদের মিলনমেলা।
পাহাড়ের আনাচে-কানাচে কিংবা মেঘলা লেকের পানিতে প্যাডেল বোট ও ইঞ্জিন নৌকায় ঘুরে ঘুরে চোখ জুড়ানো সৌন্দর্যে ঘেরা প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়া পেয়ে খুশি তারা। ডিম পাহাড়, বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান স্বর্ণমন্দির, রামাজাদী ও গৌতম বুদ্ধের মূর্তির সামনে, পাহাড়ের ভেতরে তৈরি টানেল এবং মেঘলা লেকের ঝুলন্ত সেতুতে দলবদ্ধ ছবি তোলার আনন্দেও মেতেছেন অনেকে।
নোয়াখালী থেকে বেড়াতে আসা দম্পতি অলিক ভৌমিক ও জুই সাহা বলেন, 'প্রথমবার এসেছি, ভালোই লাগছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পর্যটন স্পটগুলোর শৈল্পিকতায় আমরা মুগ্ধ'।
সামনের পাঁচ দিনে পর্যটকদের আগমন আরও বাড়বে বলে আশাবাদী পর্যটন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘদিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা কাটিয়ে পাহাড়ের পর্যটনশিল্প এই ঈদ-উল আযহা থেকেই ফের ঘুরে দাঁড়াবে বলেও প্রত্যাশা তাদের।
জেলা হোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জানান, জেলায় পর্যটকদের সেবায় রয়েছে শতাধিক হোটেল-মোটেল রিসোর্ট গেস্ট হাউস। পর্যটকদের পরিবহনে রয়েছে তিন শতাধিক ট্যুরিস্ট গাড়িও। সব মিলিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৩০ হাজার মানুষ পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্ট।
জসিম উদ্দিন বলেন, বৈচিত্র্যময় জেলা বান্দরবান ভ্রমণে এখন আর কোনো বাধা নেই। সব উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে বেড়াতে পারছেন পর্যটকরা।
তিনি বলেন, 'শঙ্কামুক্ত হলেও এবারের ঈদের ছুটিতে এখন পর্যন্ত আশানুরূপ বুকিং হয়নি জেলার হোটেলগুলোতে। দীর্ঘদিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় এটি ঘটতে পারে। তবে সামনের দিনগুলোতে আরও অনেক পর্যটক আসবেন বলে আমরা সবাই আশাবাদী'।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনজুরুল হক বলেন, সেনাবাহিনীর পরামর্শে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে প্রশাসন। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য উন্মুক্ত এখন গোটা বান্দরবান।নিরাপত্তার কোনো সমস্যাও নেই। পর্যটকরা নিরাপদে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াতে পারছেন পছন্দের পর্যটন স্পটগুলোতে। তাদের সার্বিক নিরাপত্তা ও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিতে কাজ করছে প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে