১৫ বছরে অধিকার হারানোর কারণে অনেকে অসহিষ্ণু হয়েছেন: তারেক রহমান
গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে নাগরিক হিসেবে সব গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার হারানোর ফলে অনেকের মনে এক ধরনের অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, এই অসহিষ্ণুতার কবল কাটিয়ে একজন মানবিক মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা, মনুষ্যত্ব অর্জন এবং পশুত্ব ত্যাগ করা—এটাই আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘প্রাণী ও প্রাণের মিলন মেলা’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
তারেক রহমান বলেন, মানুষ যখন প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়, প্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করে, তখন এটা মানবসমাজের পরিপক্বতা এবং উন্নত নৈতিকতারই প্রতিফলন ঘটায়। সুতরাং মানুষকে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে এবং তাদের আবাস অক্ষত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, গণতন্ত্রের সঙ্গে মানুষের অধিকারের সম্পর্ক যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে পশুপাখি ও বন্যপ্রাণীর অধিকারও গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং রাষ্ট্র-রাজনীতিতে গণতন্ত্র এবং শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠিত থাকলে বাস্তবিকভাবেই বাস্তুতন্ত্র নিরাপদ থাকে।
এ সময় তিনি ‘প্রাণ বাঁচাও, প্রাণী বাঁচাও, দেশ হোক সব প্রাণের নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ শীর্ষক স্লোগান দেন।
প্রাণিকুলের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ব্যাঙ এডিস মশার লার্ভা খেয়ে মশার বিস্তার রোধে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক উপায়। তাই বিশেষ করে শহরে-নগরে ব্যাঙের নিরাপদ আবাস স্থাপন করা জরুরি।
আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপ তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে ১,৬০০-এর বেশি প্রজাতির প্রাণী ছিল। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের আরও অনেক দেশে মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণে অনেক প্রজাতি হুমকির মুখে। আশির দশকে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ৪০০-এর বেশি ছিল, বর্তমানে এটি একশ’র কাছাকাছি। হাতির সংখ্যা এখন ২০০-এর নিচে।
তিনি বলেন, প্রাণীকল্যাণ আইন ২০১৯, বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ নিরাপত্তা আইন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা আইন, পরিবেশ উন্নয়ন আইন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইনসহ দেশের অনেক আইন রয়েছে। ইনশাআল্লাহ, জনগণের রায়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে এই আইনগুলো সময়োপযোগী করব। অনেক আইনের পরিবর্তন প্রয়োজন আছে।
বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ারের আহ্বায়ক চিত্রনায়ক আদনান আজাদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আকতার, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান, বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উদ্যোক্তা আতিকুর রহমান রুমন, আবুল হাসান মোরশেদ, ইমন দীপান্বিতা রিদি, চিত্রনায়িকা আইরিন সুলতানা, রহিমা আনজুম পুষ্প, ইঞ্জিনিয়ার আবুল হানিফ প্রমুখ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে