শেষ মুহূর্তের গোলে চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের নাটকীয় জয়
সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নাটকীয় লড়াইয়ে ভারতকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে চমকপ্রদ খেলা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ইনজুরি সময়ের শেষ মুহূর্তে জয়সূচক গোলটি করে এই ইতিহাস তৈরি করেছেন সুরভী আকন্দ প্রীতি।
অসাধারণ খেলে ম্যাচসেরা খেলোয়াড়ও হয়েছেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ গোল করা ‘গোলমেশিন’ খ্যাত এই স্ট্রাইকার।
ভারত আগেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেললেও ঢাকার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে রোববারের (৩১ আগস্ট) ম্যাচটি রোমাঞ্চকর প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়। স্বাগতিক দলের জন্য আনন্দের ম্যাচটি দর্শকদের জন্যও হৃদয়গ্রাহী হয়ে ওঠে।
প্রথম মিনিটেই পূর্ণিমা মারমার শক্তিশালী হেডের গোলে বাংলাদেশের শুরুটা দুর্দান্ত ছিল (১-০)। দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ৮ম মিনিটেই সমতা ফেরায় ভারত (১-১)। তবে, ৩৬তম মিনিটে আল্পি আক্তারের মাধ্যমে বাংলাদেশ লিড পুনরুদ্ধার করে। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঝাঁপিয়ে পড়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে এগিয়ে দেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের খেলা আরও গতিশীলতা পায়। ৪৭তম মিনিটে সুরভী আকন্দ প্রীতির চমৎকার গোলে ব্যবধান বেড়ে হয় ৩-১। কিন্তু রক্ষণভাগের ভুলে ৬৫তম মিনিটে খেলায় ফেরে ভারত। সফরকারীদের লম্বা শট বাংলাদেশের জাল ষ্পর্শ করলে ব্যবধান আবারও কমে (৩-২)। ৮৮তম মিনিটে ভারতের আরেকটি দূরপাল্লার প্রচেষ্টা বাংলাদেশের গোলরক্ষক মেঘলাকে লাইন থেকে বের করে দিলে ম্যাচটি ৩-৩ গোলের সমতায় ফেরে।
খেলাটি যখন ড্র-তে শেষ হবে বলে মনে হচ্ছিল, ঠিক তখনই ফের এগিয়ে আসেন প্রীতি। ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে তিনি ভারতীয় বক্সে গিয়ে দুর্দান্ত শট নেন যা গোলরক্ষকের হাত ভেদ করে সাইড পোস্টে লেগে জালে চলে যায় (৪-৩)। কয়েক সেকেন্ড পরেই বাংলাদেশকে বিজয়ী ঘোষণা করে শেষ বাঁশি বাজান রেফারি।
পরাজয়ের পরও ছয় ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে টুর্নামেন্টটি শেষ করেছে ভারত। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান রানার্স আপ। দ্বিতীয় লেগে ভুটানের বিপক্ষে ড্র করেই শিরোপা হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। ম্যাচটিতে জয় পেলে ভারতের সঙ্গে সমতা আনতে পারত তারা। তখন গোল পার্থক্য বা হেড-টু-হেড ফলাফলে ভিত্তি করে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের সম্ভাব্যতা তৈরি করতে পারতেন।
শিরোপা নিশ্চিত হলেও মাঠ ছাড়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন ভারতীয় খেলোয়াড়রা। বাংলাদেশের জন্য, এই জয় টুর্নামেন্টের মনোবল বৃদ্ধিকারী সমাপ্তি হিসেবে কাজ করেছিল যা স্থিতিস্থাপকতা এবং শেষ ম্যাচের বীরত্বের দ্বারা চিহ্নিত ছিল।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে