ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিককে শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধা
ভাষাসংগ্রামী, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য আহমদ রফিককে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হলে ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শহীদ মিনারে পৌঁছানোর পরপরই মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে ধরেন উপস্থিত জনতা। পরে ‘আহমদ রফিক ফাউন্ডেশন’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভাষাসংগ্রামীর ইচ্ছানুযায়ী মরদেহ বারডেম হাসপাতাল (ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ) দান করা হবে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য তিনি মরণোত্তর দেহ দান করে গেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আহমদ রফিক। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ফেইলিওর, আলঝেইমার্স, পারকিনসন্সসহ নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন।
১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করা আহমদ রফিক স্ত্রীকে হারানোর পর রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরে একাই বসবাস করতেন। নিঃসন্তান এই ভাষাসংগ্রামীর জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ ছিল বিপুল বইয়ের সংগ্রহ।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসবিদ, গবেষক ও লেখক হিসেবে তিনি শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। রবীন্দ্রচর্চায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত করে।
২০১৯ সালে তার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে শুরু করে এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় অন্ধ হয়ে পড়েন। ২০২১ সালে পা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি ঘটে। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা আন্দোলনে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জীবদ্দশাতেই তার চিকিৎসা ও রাষ্ট্রীয় সহায়তার দাবি জানিয়েছিলেন দেশের বুদ্ধিজীবীরা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে