আজ ৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস
কুড়িগ্রামের মানুষ আজ ৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস উদযাপন করছেন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে তাদের থেকে কুড়িগ্রাম জেলা মুক্ত করেছিলেন। কোম্পানি কমান্ডার বীর প্রতীক আবদুল হাই সরকার তার দলের সঙ্গে কুড়িগ্রাম শহরে প্রবেশ করে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা একটি ওভারহেড ওয়াটার ট্যাঙ্কে উত্তোলন করেন, যা জেলার মুক্তির প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।
বীর প্রতীক তারামন বিবি এই সেক্টরের অধীনেই লড়াই করেছিলেন।
২৩৬ দিন দীর্ঘ দখলের পর এই বিজয় উদযাপনে পুরো এলাকায় উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে, মানুষরা আশ্রয় থেকে বের হয়ে উৎসবের সঙ্গে যুক্ত হন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধারা পতাকা উত্তোলনের স্থানে একটি স্মৃতিসৌধ স্থাপনের পাশাপাশি উপেক্ষিত গণকবরগুলো পুনরুদ্ধার এবং শহীদদের নাম প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কুড়িগ্রাম ৬ এবং ১১ সেক্টরের অধীনে ছিল, যথাক্রমে নেতৃত্ব দেন উইং কমান্ডার এম খদেমুল বাশার ও মেজর আবু তাহের। ১৯৭১ এর যুদ্ধে জেলাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে পরিচালনা করতে থাকে একের পর এক সফল অভিযান। সংগঠিত গেরিলা অভিযান ও সমন্বিত আক্রমণের মাধ্যমে পাকবাহিনীর উপর প্রচন্ড আক্রমন চালিয়ে ১৪ নভেম্বর ভূরুঙ্গামারী, ২৮ নভেম্বর নাগেশ্বরী, ৩০ নভেম্বর সমগ্র উত্তর ধরলা এবং ৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম শহরসহ সমগ্র জেলা হানাদার মুক্ত করে।
প্রাক্তন কোম্পানি কমান্ডার আবদুল হাই সরকার স্মরণ করেন, সমন্বিত গেরিলা হামলা ও বিমান আক্রমণের কারণে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়, ফলে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে পতাকা উত্তোলন করে বিজয় উদযাপন করতে সক্ষম হন।
স্থানীয় ছাত্র-ছাত্রী ও বাসিন্দারা এই দিনটিকে ন্যায় ও সমতার বাংলাদেশ গঠনের প্রেরণার উৎস হিসেবে নিয়ে যথাযথভাবে স্মরণ করছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে