Views Bangladesh Logo

রংপুরে ‘মব’ করে সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ ‘জুলাইযোদ্ধার’ বিরুদ্ধে

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

রংপুরে দৈনিক সংবাদ ও একুশে টেলিভিশনের প্রতিনিধি লিয়াকত আলী বাদলকে প্রকাশ্যে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর কোর্ট মসজিদ এলাকা থেকে তাকে তুলে নেয় একদল যুবক। রকি নামে এক ব্যক্তি নিজেকে ‘জুলাইযোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে ৭–৮ জন সহযোগীসহ এ ঘটনার নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ করেছেন বাদল।

তাকে জোর করে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) উম্মে ফাতেমার কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে একটি দুর্নীতিবিষয়ক সংবাদ প্রকাশের জন্য ক্ষমা চাইতে চাপ দেয়া হয়। বাদল দাবি করেন, তিনি অন্যায় কিছু করেননি বলে ক্ষমা চাননি।

খবর পেয়ে সহকর্মী সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের ওপরও নগর ভবনের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী হামলা চালান। পরে সাংবাদিকদের ভেতরে আটকে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে তাদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জরুরি বৈঠকে বসেন সিটি করপোরেশনের সিইও, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও সাংবাদিক নেতারা। বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রমিজ উদ্দিন ঘটনাটিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেন।

সাংবাদিক নেতারা বলেন, কার নির্দেশে একজন সাংবাদিককে অপহরণ করা হলো, তা স্পষ্ট করতে হবে। হামলায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। একই সঙ্গে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী সাংবাদিকদের হেনস্তা করেছেন, তাদের বরখাস্ত করার দাবি জানান।

লিয়াকত আলী বাদল বলেন, সিটি করপোরেশনের অটোরিকশার লাইসেন্স বাণিজ্য নিয়ে আমি প্রতিবেদন করেছিলাম। সেই সংবাদেই ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়েছে। আমি মনে করি, সিইও উম্মে ফাতেমা ও সাবেক প্রশাসক শহিদুল ইসলামের ইন্ধন ছাড়া এ ঘটনা সম্ভব নয়। আমি মামলা করব, ন্যায়বিচার চাই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি ঘটনার নিন্দা জানান। রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন, রিপোর্টার্স ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন একে ন্যক্কারজনক বলে উল্লেখ করে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায়।

রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক বলেন, এ ঘটনার মূল নেপথ্যে সিটি করপোরেশনের সিইও। তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে, নইলে সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে।

রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সভাপতি শাহ্ বায়েজিদ আহমেদ বলেন, সংবাদ প্রকাশের কারণে একজন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে মারধর নজিরবিহীন ও চরম উদ্বেগজনক। দায়ীদের আইনের আওতায় আনতেই হবে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ঘটনার তদন্ত হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য কয়েক দিন আগে লিয়াকত আলী বাদল দৈনিক সংবাদে ‘জুলাইযোদ্ধাদের নামে অটোরিকশার লাইসেন্সে ৫ কোটি টাকার বাণিজ্যের পাঁয়তারা’ শিরোনামের প্রতিবেদন করেছিলেন। এরপরই তার ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ