পাঠক-ক্রেতাশূন্য ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ বইমেলা
পঞ্চম দিনেও দেখা মেলেনি ক্রেতা-পাঠকদের, বই বিক্রিও শূন্যের কোটায়। দিনভর সুনসান নীরবতার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান বইমেলা ২০২৫’ ঘিরে তাই একরাশ হতাশা প্রকাশক-স্টলকর্মী ও লেখকদের।
জুলাই গণআন্দোলনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে বাংলা একাডেমিতে চলছে ছয় দিনের এই বইমেলা। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় মেলায় অংশ নিচ্ছে ৬০টি প্রকাশনী।
সোমবার (৪ আগস্ট) মেলা প্রাঙ্গণে গেলে স্টলকর্মীরা জানান, মেলার এক দিনও ক্রেতা-দর্শনার্থী উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। মাঝে মাঝে দু-একজন শিক্ষার্থী আর দু-চারজন লেখককে আসতে দেখা যাচ্ছে। হতাশ প্রকাশকদের মন্তব্য ছিল, ‘বইমেলা দেখারও মানুষ নেই, কেনারও মানুষ নেই’।
পাঁচ দিনে একটি বইও বিক্রি হয়নি জানিয়ে তাকদুম প্রকাশনীর স্টলকর্মী তিশা বলেন, ‘কেউ জানেই না, এখানে মেলা হচ্ছে। বসে থাকতে থাকতে ঘুম চলে আসে। মোবাইল টিপতে টিপতে চার্জ শেষ হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘স্টলে আমরা দু’জন। আমার বেতন দৈনিক ৮০০ টাকা আর আরেকজনের ১ হাজার টাকা। অথচ এক টাকারও বিক্রি হয়নি। স্টলের যে ৫০০ টাকা ভাড়া, সেটাও উঠবে কিনা সন্দেহ।’
বইমেলাটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হলে ভালো হতো বলেও মত তিশার।
বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ সোসাইটির স্টলে থাকা জাহাঙ্গীর হোসেন শরীফ বলেন, ‘এখনো একটি বইও বিক্রি হয়নি। দিনে ৪৮০ টাকা খরচ। পাঁচ দিনে ওঠেনি স্টল ভাড়ার ৫০০ টাকাও।’
আদর্শ প্রকাশনীর স্টলকর্মী জানান, ‘এ পর্যন্ত ৫-৬টি বই বিক্রি হয়েছে। পাঠকরা এলে তো বই বিক্রি হবে, লোকজনও তো নেই।’
ভাষাচিত্র প্রকাশনীর স্টলকর্মী পিয়াস জানান, পঞ্চম দিনে দুটি আর এর আগের চার দিনে ১০-১৫টির মতো বই বিক্রি হয়েছে।
প্রথমা প্রকাশনীতে ১০-১২টি বই বিক্রি হয়েছে বলে জানানো হয় স্টল থেকে। অনন্যা প্রকাশনীর স্টলকর্মী মিজান, অন্যপ্রকাশের অনন্যা এবং প্রতিভা প্রকাশের স্টলকর্মীরাও এ পর্যন্ত ৪-৫টি করে বই বিক্রি করতে পেরেছেন।
মেলা নিয়ে হতাশ প্রকাশকরা বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান বইমেলায় বিক্রি শূন্য টাকা। এটিও একটি ইতিহাস। গাটের টাকা খরচ করে এমন নিষ্প্রাণ মেলা না করাই ভালো’।
প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকে। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মেলামঞ্চে চলে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠান। মেলা চলবে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) পর্যন্ত।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে