রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে বিচারকদের কাজ করতে হবে: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে সকল বিচারককে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রভুভক্ত মানসিকতা থেকে বের হতে হবে। মানুষকে হয়রানি করা বন্ধ না করলে বিচারবিভাগ একসময় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে।’ তবে লোকবল সংকটের মধ্যেও বিচারকরা যে পরিমাণ মামলা নিষ্পত্তি করছেন, তা অবিশ্বাস্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে দেশের সব জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বিদায়ী অভিভাষণে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের সংস্কার শুরু করতেই তাকে নীরবতা ভাঙতে হয়েছে। ভবিষ্যতের প্রধান বিচারপতিকে সহায়তার লক্ষ্যে বিচার বিভাগের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের বিচার বিভাগ কখনও পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি। লোকবল সংকট থাকা সত্ত্বেও বিচারকরা যেভাবে মামলা নিষ্পত্তি করছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।

অসৎ বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। রাজনীতির প্রভাবের ঊর্ধ্বে উঠে সকল বিচারককে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, বিচারকের অন্তরে ভয় থাকলে সেই দায়িত্ব পালন করা উচিত নয়। শুনানিকালে কোনো বিশেষ পদধারী ব্যক্তির চাপে ভীত হওয়া যাবে না। বিচার বিভাগের সুদিনের স্বপ্ন দেখলেও ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

বিদায়ী অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এর আগে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, আগামী ২৭ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অবসরে যাচ্ছেন। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এটিই ছিল তার শেষ অভিভাষণ।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ২১ সেপ্টেম্বর তিনি বিচার বিভাগের সংস্কারের একটি ঐতিহাসিক রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিলেন।