এক মাস আগে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল: পুলিশ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেনকে (২৫) হত্যার পরিকল্পনা এক মাস আগে করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
জোবায়েদ হত্যার ঘটনায় তার ভাই আজ সকাল ১১টার দিকে বংশাল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে—তারা হলেন মাহির রহমান (১৯), বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮) ও ফারদীন আহমেদ আয়লান (২০)।
পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, পড়াতে গিয়ে জোবায়েদের সঙ্গে বর্ষার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে বর্ষার সঙ্গে আগে থেকেই মাহির রহমানের প্রেম ছিল। এ ঘটনায় একটি ত্রিভুজ সম্পর্কের জটিলতা তৈরি হয়।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মাহির ও বর্ষার দেড় বছরের সম্পর্ক ছিল। যদিও এর আগে বংশাল থানার ওসি জানিয়েছিলেন, তাদের সম্পর্কের বয়স ৯ বছর।
এস. এন. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাহিরকে বর্ষা বলেন, জোবায়েদকে না সরালে তিনি মাহিরের হতে পারবেন না। এরপরই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।’ গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যার দিন বিকেল চারটায় জোবায়েদ পড়াতে আসবেন—এ তথ্য মাহিরকে দেন বর্ষা। এরপর মাহির তার বন্ধু আয়লানকে নিয়ে আগে থেকেই বর্ষার বাসার নিচে ওত পেতে থাকে। জোবায়েদ পৌঁছালে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মাহির বর্ষাকে ছেড়ে দিতে বললে জোবায়েদ রাজি হননি। তখন মাহির ছুরি দিয়ে জোবায়েদের গলায় আঘাত করে, এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন বলেন, ‘আঘাত পাওয়ার পর জোবায়েদ বাঁচার জন্য সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠেন, বিভিন্ন বাসার দরজায় কড়া নাড়েন, কিন্তু কেউ দরজা খোলেননি। তৃতীয় তলায় বর্ষার কাছে গিয়ে সাহায্য চাইলে তিনিও কোনো সহযোগিতা করেননি।’
মাহিরের মা ছেলেকে থানায় সোপর্দ করেছেন—এমন তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে পুলিশ কৌশলগতভাবে মাহিরের পরিবারের ওপর চাপ দিয়েছিল। তারা নিজেরা স্বেচ্ছায় হস্তান্তর করেননি; এটি পুলিশের কৌশলের অংশ ছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের মুহাম্মদ তালেবুর রহমান, লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আমিনুল কবীর তরফদার উপস্থিত ছিলেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে