জামায়াতকে মাথায় উঠতে দেবে না বিএনপি: মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জামায়াতে ইসলামীর আর উত্থান ঘটতে দেয়া হবে না।
সম্প্রতি ঢাকায় কলকাতার দৈনিক 'এই সময়'-কে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়।
সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুল জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত ৩০টি আসন চেয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘তারা ৩০টি আসন চেয়েছে। আমরা তাতে উৎসাহ দেখাইনি। আমরা অনেক কমসংখ্যক আসনের কথা বলেছি, যা তাদের মনঃপূত হয়নি।’
ফখরুল আরও বলেন, “আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আমরা জামায়াতকে আর আমরা মাথায় উঠতে দেবো না। তারা যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন শক্তি, অতীতে আমরা তাদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।’
আন্তর্জাতিক জনসংযোগ (পিআর) প্রচারণার মাধ্যমে বিএনপিকে চাপের মুখে ফেলার ধারণাকেও উড়িয়ে দেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, পিআর-টিআর সবই বিএনপির উপরে চাপ সৃষ্টির কৌশল।
এগুলো দিয়ে বিএনপিকে চাপে ফেলা যাবে না।
মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, জামায়াত কিন্তু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছে। আসলে দেশের মানুষ প্রচণ্ডভাবে নির্বাচন চাইছেন। সেনাবাহিনী চাইছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও চাইছেন।
বিএনপি মহাসচিব নিশ্চিত করেন, জামায়াত সম্ভবত নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি বলেন, “ভোট পিআর বা টিআর পদ্ধতিতে হবে না। মানুষ যে পদ্ধতিতে ভোট বোঝেন, সেই প্রচলিত পদ্ধতিতেই হবে বাংলাদেশের ভোট হবে।’
অন্যান্য রাজনৈতিক দল সম্পর্কে ফখরুল বলেন, এখন আর জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) কোনো শক্তিশালী শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে না বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, এক সময় তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে; কিন্তু এখন তারা রাজনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক। তাদের ডাকে মানুষ আর সাড়া দেয় না।
আওয়ামী লীগ এবং তাদের মিত্র, যেমন জাতীয় পার্টির আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেয়া উচিত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলেছি আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিকরা সবাই, এমনকি জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে অংশ নিক। একটা সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট হোক। ’
নিজের অবস্থানের সমালোচনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘এ জন্য অনেকে আমাকে ভারতের এজেন্ট, আওয়ামী দালাল বলে গালাগাল দিচ্ছে; কিন্তু শেখ হাসিনার অপকর্ম আমরাও কেন করব? ১৫ বছর প্রতিপক্ষকে ভোটে দাঁড়াতেই দেননি হাসিনা, তার শাস্তি পেয়েছেন। একই কাজ করলে আমরাও তো প্রতিফল পাব। তবে মানুষ এত রক্ত দেখেছেন, এত প্রাণহানি—তাদের মধ্যে আওয়ামী-বিরোধিতা রয়েছে।’
সবশেষে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বছরের পর বছর ধরে চলা হত্যাযজ্ঞ এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের কারণে জনগণের মনোভাব এখন আওয়ামী লীগবিরোধী। মানুষ এত রক্ত, এত প্রাণহানি দেখেছেন—তাদের মধ্যে আওয়ামী-বিরোধিতা রয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে