দ্রুতই দেশে ফিরে আসব, নির্বাচনে অংশ নেব: বিবিসি বাংলাকে তারেক রহমান
দীর্ঘ দুই দশক পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই সাক্ষাৎকারে তিনি দেশে ফেরা, নির্বাচনের সম্ভাবনা ও কথা বলার অধিকার হরণের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে প্রকাশ করা হয়।
বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাদির কল্লোলকে দেয়া এই সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।
কেন তিনি এখনো দেশে ফেরেননি— এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘কিছু সংগত কারণে হয়ত ফেরাটা হয়ে উঠেনি এখনো। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশাআল্লাহ দ্রুতই ফিরে আসব।’
সেটা কবে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দ্রুতই মনে হয়। দ্রুতই ইনশাআল্লাহ।’
নির্বাচনের আগে দেশে আসার সম্ভাবনা আছে কি না, জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনীতি যখন করি, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে স্বাভাবিক, নির্বাচনের সাথে রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক কর্মীর একটি ওতপ্রোত সম্পর্ক। কাজেই যেখানে একটি প্রত্যাশিত, জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? আমি তো আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ইচ্ছা থাকবে, আগ্রহ থাকবে সেই প্রত্যাশিত যে প্রত্যাশিত নির্বাচন জনগণ চাইছে। সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে জনগণের সাথে জনগণের মাঝেই থাকব ইনশাআল্লাহ।’
দেশে আসার বিষয়ে নিরাপত্তার শঙ্কার প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন রকম শঙ্কার কথা তো আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তো শুনেছি। সরকারেরও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকেও তো অনেক সময় অনেক শঙ্কার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে, বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে।’
সাক্ষাৎকারের শুরুতে তিনি প্রবাস জীবনের অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সময় তো স্বাভাবিকভাবে ব্যস্তই যাচ্ছে। ফিজিক্যালি হয়ত আমি এই দেশে আছি, বাট মন-মানসিকতা সবকিছু মিলিয়ে তো আমি গত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশেই রয়ে গিয়েছি।’
গণমাধ্যমের সঙ্গে দীর্ঘদিন কথা না বলার বিষয়ে জানতে চাইলে তারেক রহমান এই ধারণাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘ব্যাপারটা বোধ হয় এরকম না, ব্যাপারটা বোধ হয় একটু ভিন্ন। আসলে আমি কথা ঠিকই বলেছি। আমি দীর্ঘ ১৭ বছর এখানে আছি এই দেশে, প্রবাস জীবনে, তবে আমার উপরে যখন দলের দায়িত্ব এসে পড়েছে তারপর থেকে আমি গ্রামগঞ্জে আমার নেতাকর্মীসহ তাদের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষ যখন যেভাবে অংশগ্রহণ করেছে, আমি সকলের সাথে কথা বলেছি।’
কথা বলার অধিকার রুদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই জানেন বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোর্ট থেকে রীতিমতো একটা আদেশ দিয়ে আমার কথা বলার অধিকারকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমি যদি গণমাধ্যমে কিছু বলতে চাইতাম, হয়তো গণমাধ্যমের ইচ্ছা ছিল ছাপানোর, গণমাধ্যম সেটি ছাপাতে পারত না।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি একবার প্রেস ক্লাবে কথা বলেছিলাম। পরদিন দেখলাম যে, তখনকার প্রেস ক্লাবের যারা সদস্য ছিলেন বা কমিটি ছিল, তারা একটি মিটিং ডেকে একটি সভা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা তখন আমাকে আইনের দৃষ্টিতে ফেরারি বলা হয়েছিল যে, সেরকম কোনো ব্যক্তিকে তারা প্রেস ক্লাবে কথা বলতে দেবে না। এভাবে তারা চেষ্টা করেছিল আমার কথা বন্ধ করে রাখতে।’
সবশেষে তারেক রহমান দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমি কথা বলেছি, সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন পন্থায় আমি পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি, আমি ইনশাআল্লাহ পৌঁছেছি মানুষের কাছে। কাজেই গণমাধ্যমে যে কথা বলিনি তা না। আমি কথা বলেছি হয়ত আপনারা তখন কথা নিতে পারেননি অথবা শুনতে পারেননি। ইচ্ছা থাকলেও ছাপাতে পারেননি, হয়ত প্রচার করতে পারেননি। কিন্তু আমি বলেছি, আমি থেমে থাকিনি।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে