ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের আয়োজনে জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস ২০২৫ উদযাপন
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস ২০২৫-এর ১০ম বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার (আইজিসিসি)।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কূটনীতিক, চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ, যোগব্যায়াম অনুশীলনকারী এবং বাংলাদেশি যুব প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘মানুষের জন্য আয়ুর্বেদ, গ্রহের জন্য আয়ুর্বেদ’, যা ব্যক্তিগত কল্যাণের পাশাপাশি পরিবেশগত ভারসাম্য ও টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে।
স্বাগত বক্তব্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান ইতিহাস, ভাষা, ও সংস্কৃতির বন্ধন এবং প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অভিন্ন পরম্পরার কথা তাৎপর্য সহকারে তুলে ধরেন আইজিসিসি পরিচালক অ্যান মেরি জর্জ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আয়ুর্বেদ চর্চা হয়ে আসছে। এটি ইউনানি, যোগব্যায়াম ও হোমিওপ্যাথির পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থার কারণে উভয় দেশেই বহু ওষধি গাছ থাকায় গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিশাল সুযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ে অধ্যয়ন করার জন্য বহুসংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভারতে যায়, যা দুই দেশের মধ্যে জ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিনিময়কে আরও আরও জোরদার করছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে গবেষণা, শিক্ষা এবং সর্বোত্তম অনুশীলনের মাধ্যমে আয়ুর্বেদ সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের উপ-প্রধান অধ্যাপক ডা. সারিক হাসান খান। তিনি প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবায় আয়ুর্বেদ ও ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে “আয়ুর্বেদের যাত্রা” শীর্ষক একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, আইজিসিসির প্রশিক্ষক শাহনাজ পারভিন শিখার যোগ প্রদর্শনী এবং ‘যোগা ব্লিস, ঢাকা’র প্রতিষ্ঠাতা ফারহানা সুলতানা করিমের পরিচালনায় এক ইন্টারেকটিভ যোগ সেশন।
বক্তারা এ উদযাপনকে ভারতের “স্বাস্থ্য ভারত যোজনা”র বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে যুক্ত করেন, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্য অবকাঠামো জোরদার করা, রোগ নজরদারি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, বায়োমেডিকেল গবেষণা সম্প্রসারণ এবং ‘ওয়ান হেলথ’ ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ চলছে।
ঢাকায় জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস ২০২৫ উদযাপন প্রমাণ করেছে যে, ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা শুধু স্বাস্থ্য ও টেকসই জীবনের সমাধানই নয়, বরং ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ককেও সুদৃঢ় করছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে