ছাত্রীকে অধ্যক্ষের আপত্তিকর মন্তব্য, শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
নওগাঁ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় এবং নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আপত্তিকর কথোপকথনের অভিযোগে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় কলেজ চত্বরে ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ, আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা’ এবং কলেজ শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি ফেসবুক মেসেঞ্জারে নারী শিক্ষার্থীদের আপত্তিকর বার্তা পাঠিয়েছেন এবং ওড়না ছাড়া ছবি পাঠাতে চাপ দিয়েছেন। সম্প্রতি এসব কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কলেজজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা কলেজ গেটে এসব স্ক্রিনশট টানিয়ে রাখেন। তারা অভিযোগ করেন, এসব বিষয়ে আপত্তি তুললে শিক্ষার্থীদের কলেজ প্রশাসনের মাধ্যমে ভয়ভীতি ও হামলার শিকার হতে হয়। এছাড়া ভর্তি ও বিভিন্ন খাতের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগও ওঠে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন—নওগাঁ জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আরমান হোসেন, শিক্ষার্থী সাদনান সাকিব, শহীদ ফাহমিনের মা কাজী লুলুন মাখমিম (শিল্পী), কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনায়েদ হোসেন জুন এবং শিক্ষার্থী অভিভাবক গোলাম রসুলসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, অধ্যক্ষ সামসুল হক নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন, ওড়না ছাড়া ছবি চাইতে চাপ দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে কাউকে জানালে হুমকি দিয়েছেন। তারা প্রশ্ন তোলেন, 'এমন মানসিকতার অধিকারী একজন ব্যক্তির কাছে কীভাবে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকতে পারে?'
ছাত্র প্রতিনিধি আরমান হোসেন বলেন, 'কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল বা ক্যান্টিন নেই। নিয়মিত ক্লাসে শিক্ষার্থীরা না এলেও অধ্যক্ষ কখনো গুরুত্ব দেননি। শিক্ষার পরিবেশ না করে কেবল অর্থ আত্মসাৎ নিয়েই তিনি ব্যস্ত থেকেছেন।'
জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, 'কলেজের উন্নয়নের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে। অথচ কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন নেই। অধ্যক্ষ মাস্তান বাহিনী পুষে রেখেছেন, যারা প্রায়ই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।'
মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কলেজে সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে