ফের দুই মহাসড়ক অবরোধ, ঢাকার সঙ্গে ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করার প্রতিবাদে আবারও দুই মহাসড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৮টা থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের নওয়াপাড়া ও হামিরদী বাসস্ট্যান্ড, হামিরদী ইউনিয়নের পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এবং ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ড ও আলগী ইউনিয়নের সুয়াদী এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এর ফলে ভাঙ্গা হয়ে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে এই দুই মহাসড়কে ২৩ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
অবরোধকারীরা জানান, ভাঙ্গাকে বিভক্ত করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা কোনোভাবেই মানা হবে না। আমরা ভাঙ্গার মানুষ, ভাঙ্গাতেই থাকতে চাই। নগরকান্দার সঙ্গে জুড়ে দেয়া কোনোভাবেই মেনে নেব না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগে ফরিদপুর-৪ আসন গঠিত ছিল ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে। অপরদিকে ফরিদপুর-২ আসন ছিল নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা নিয়ে। কিন্তু গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটে ফরিদপুর জেলার দুটি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাতে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
অবরোধ চলাকালে ভাঙ্গা থানা ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে বিপুল সংখ্যক মানুষের কারণে যান চলাচল দীর্ঘ সময় স্থবির হয়ে পড়ে। এতে মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ি আটকা পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মহাসড়ক ক্লিয়ার করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু অবরোধকারীদের বুঝিয়েও কাজ হচ্ছে না। তবে জরুরি যানবাহনগুলো ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে।’
প্রসঙ্গত, সীমানা পুনর্বিন্যাসের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গায় দুই দফা সড়ক অবরোধ করেছিলেন এলাকাবাসী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাসে তখন অবরোধ প্রত্যাহার করা হলেও পরে ওই দুই ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করে নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
গত ৭ সেপ্টেম্বর বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী শহিদুল ইসলাম বাবুল ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান দুলালসহ সাতজনের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব এই নোটিশ পাঠান। নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন বাতিলের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আইন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। সে সময় নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘বিক্ষোভ-আন্দোলন করেও কোনো লাভ হবে না।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে