Views Bangladesh Logo

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী জুলাই স্মৃতি উদযাপন করবে সরকার

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

৪ এর গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মঙ্গলবার (২৪ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় তা জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ১৯ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণ করতে আগামী ১ জুলাই থেকে বিশেষ কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে কর্মসূচি শুরু হবে। কিন্তু মূল ইভেন্ট শুরু হবে জুলাইয়ের ১৪ তারিখ থেকে। এটি চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, জুলাইয়ে যে রকম পুরো বাংলাদেশ এক হয়েছিল, আবার সে অনুভূতিটাকে ফিরিয়ে আনা।’

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ৩৬ দিনব্যাপী ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো
১ জুলাই
মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এ দিন জুলাই ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হবে। জুলাই গণহত্যার দায়ী খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু হবে, যা ১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। জুলাই শহীদদের স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবৃত্তি চালু হবে।

৫ জুলাই
অবৈধ আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতনের প্রচারণার জন্য দেশব্যাপী পোস্টারিং কর্মসূচি শুরু হবে।

৭ জুলাই
‘Julyforever.org’ নামে একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হবে।

১৪ জুলাই: ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’
১৪ জুলাইয়ের ঘটনার ভিডিও শেয়ার করা হবে এবং একটি শহীদ পরিবারের সাক্ষ্য প্রচার করা হবে, যা ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এ দিনটি জুলাই নারী দিবস হিসেবে পালিত হবে। প্রতিটি জেলায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হবে। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ৬৪টি জেলায় এবং দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাইয়ের ভিডিও প্রদর্শন করা হবে। টিএসসিতে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, প্রজেকশন ম্যাপিং, জুলাইয়ের গান এবং ড্রোন শো আয়োজন করা হবে।

১৫ জুলাই: ‘আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া’
১৫ জুলাইয়ের ঘটনার ভিডিও শেয়ার করা হবে। জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ, ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, এবং জুলাইয়ের গানের আয়োজন হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলইডি ওয়াল ইনস্টলেশন ও প্রজেকশন ম্যাপিং করা হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হবে।

১৬ জুলাই: ‘কথা ক’
১৬ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে তিনটি বিভাগীয় শহরে ‘ভিআর শো’ প্রদর্শন করা হবে। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাঈদের স্মরণে অনুষ্ঠান হবে। রংপুর ও চট্টগ্রামে জুলাইয়ের গান এবং ড্রোন শো প্রদর্শন করা হবে।

১৭ জুলাই: ‘শিকল-পরা ছল’
১৭ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। প্রতীকী কফিন মিছিল হবে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘জুলাই স্মরণ’ অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ১৭ জুলাইয়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনার আয়োজন হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হবে।

১৮ জুলাই: ‘আওয়াজ উঠা’
১৮ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। ১ মিনিটের প্রতীকী ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট, জুলাইয়ের গান, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, এবং ড্রোন শো আয়োজিত হবে। ঢাকার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই স্মরণ’ অনুষ্ঠান হবে। ট্র্যাশন শো ও ম্যারাথন আয়োজন করা হবে।

১৯ জুলাই: ‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা’
১৯ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। শহীদদের স্মরণে নরসিংদী ও সাভারে সমাবেশ-১ হবে। ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এ দিনটি গণহত্যা ও ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালিত হবে।

২০ জুলাই: ‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’
২০ জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ ভিডিও শেয়ার করা হবে। ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। শহীদদের স্মরণে বসিলা ও মিরপুর ১০-এ সমাবেশ-২ হবে।

২১ জুলাই: ‘রক্ত গরম মাথা ঠাণ্ডা’
২১ জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ ভিডিও শেয়ার করা হবে। ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে সব মাদ্রাসায় জুলাই স্মরণে অনুষ্ঠান হবে। শহীদদের স্মরণে যাত্রাবাড়িতে সমাবেশ-৩ হবে।

২২ জুলাই: ‘আভাস’
২২ জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ ভিডিও শেয়ার করা হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অদম্য-২৪’ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন হবে। রাজু ভাস্কর্যের সামনে জুলাইয়ের কবিতা পাঠ করবেন কবিরা। জুলাইয়ের পঙ্ক্তিমালা প্রকাশিত হবে।

২৩ জুলাই: ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’
২৩ জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ ভিডিও শেয়ার করা হবে। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সম্পৃক্ত করে অনুষ্ঠান হবে। জুলাই আন্দোলনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা বিদেশি সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ে অনলাইন ও অফলাইন আয়োজন হবে। দূতাবাসগুলোতে জুলাইয়ের নির্বাচিত ছবি ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। গ্রাফিতি অঙ্কন ও জুলাই গ্রাফিতি প্রদর্শনী হবে।

২৪ জুলাই: ‘কী করেছে তোমার বাবা’
২৪ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। শিশু শহীদদের স্মরণে দেশব্যাপী কর্মসূচি হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘২৪-এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন’ প্রতিযোগিতা হবে। নারায়ণগঞ্জে শিশু শহীদ রিয়া গোপের স্মরণে অনুষ্ঠান হবে। শিশু অ্যাকাডেমিতে জুলাইয়ের শিশু শহীদদের থিমে একটি আইকনিক ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে। জুলাই আন্দোলনকে উপজীব্য করে শিশুদের জন্য গ্রাফিক নভেল প্রকাশিত হবে। এ দিনটি শিশু শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হবে।

২৫ জুলাই: ‘চলো ভুলে যাই’
২৫ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট নাট্যমঞ্চে জুলাইয়ের ঘটনা নিয়ে নাটক প্রদর্শন করা হবে।

২৬ জুলাই: ‘পলাশীর প্রান্তর’
২৬ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রসংগঠনগুলোর জমায়েত ও অনুষ্ঠান হবে। মাদ্রাসার ভূমিকা নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। জুলাইয়ের র‌্যাপ গানের অনুষ্ঠান হবে। বাংলা একাডেমিতে জুলাইয়ের প্রকাশিত বই নিয়ে বইমেলা হবে।

২৭ জুলাই: ‘ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর গান’
২৭ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক সংলাপ হবে। ‘কালচারাল প্যারাডাইম শিফট’ তথ্যচিত্র ও বৌদ্ধ পূর্ণিমা নিয়ে ভিডিওচিত্র প্রচার করা হবে।

২৮ জুলাই: ‘চলো ভুলে যাই’
২৮ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। প্রধান উপদেষ্টার ভিডিও বার্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। জুলাইয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিজ্ঞতা নিয়ে অনুষ্ঠান হবে। ‘মনসুন আর্কাইভ’ প্রকাশিত হবে। ‘চিকিৎসা নেই, লাশ নেই’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। দেশব্যাপী রক্তদান ও মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন হবে।

২৯ জুলাই: ‘বাংলা মা’
২৯ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। জুলাই অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক প্যানেল আলোচনা হবে। গাজীপুর বা সাভারে শ্রমিকদের সমাবেশ হবে।

৩০ জুলাই: ‘চল চল চল’
৩০ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। অনলাইনে জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠান হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখা সাংবাদিকদের নিয়ে অনুষ্ঠান হবে। জুলাই অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক প্যানেল আলোচনা হবে।

৩১ জুলাই: ‘কাণ্ডারি হুঁশিয়ার’
৩১ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার করা হবে। দেশের সব কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি স্মরণে অনুষ্ঠান হবে।

১ আগস্ট (৩২ জুলাই): ‘গণজোয়ার’
১ আগস্টের ভিডিও শেয়ার করা হবে। ৬৪টি জেলায় জুলাই নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। সব বাংলাদেশি দূতাবাসে জুলাই নিয়ে নির্বাচিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। ‘২৪ জুলাই ফটোগ্রাফারের চোখে’ শীর্ষক কফি টেবিল বুক প্রকাশিত হবে। জুলাই গণহত্যার খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির সমাপ্তি হবে।

২ আগস্ট (৩৩ জুলাই): ‘আমি বাংলায় গান গাই’
২ আগস্টের ভিডিও শেয়ার করা হবে। দেশের সব জেলায় ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান হবে।
প্রজেকশন ম্যাপিং আয়োজন করা হবে।

৩ আগস্ট (৩৪ জুলাই): ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’
৩ আগস্টের ভিডিও শেয়ার করা হবে। শাহবাগ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত শোভাযাত্রা হবে। রিকশায় জুলাইয়ের গ্রাফিতি অঙ্কন ও রিকশা মিছিল হবে। ৬৪টি জেলায় জুলাই নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে।

৪ আগস্ট (৩৫ জুলাই): ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’
৪ আগস্টের ভিডিও শেয়ার করা হবে। দেশব্যাপী জুলাই যোদ্ধাদের সমাগম হবে। জুলাইয়ের কার্টুন প্রদর্শনী হবে। ৬৪টি জেলায় ‘স্পটলাইট অন জুলাই হিরোজ’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে।

৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই): ‘শোনো মহাজন’
৫ আগস্টের ভিডিও শেয়ার করা হবে। ৬৪টি জেলার কেন্দ্রে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। প্রধান উপদেষ্টা শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। শহীদদের জন্য প্রার্থনা, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে বিজয় মিছিল, এয়ার শো, গানের অনুষ্ঠান, ‘জুলাইয়ের ৩৬ দিনসহ অন্যান্য ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, ড্রোন শো, এবং র‌্যাপের সঙ্গে বচসা আয়োজন করা হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ