সরকার আমাদের প্রতিবাদে কর্ণপাত করছে না: ফরহাদ মজহার
দীর্ঘকাল ধরে মাজার ভাঙার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন উল্লেখ করে বিশিষ্ট লেখক, কবি, দার্শনিক ফরহাদ মজহার বলেছেন, দুঃখজনক যে সরকার আমাদের প্রতিবাদে কর্ণপাত করছে না। এভাবে চলতে পারে না। সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, বিখ্যাত পালাকার ও বয়াতি মহারাজ আবুল সরকারের মুক্তি এবং মানিকগঞ্জে ভক্তদের ওপর জঘন্য হামলার প্রতিবাদে আজ সকালে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘সাধুগুরুভক্ত ও ওলি-আওলিয়া আশেকান পরিষদ’ প্রতিবাদ সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছে। আসুন। প্রতিবাদ করুন।
তিনি বলেন, যারা মহান আল্লাহ তায়ালা— অর্থাৎ কোরানুল করিমের নির্দেশ অনুযায়ী গায়েবে ঈমান এনেছেন, যারা নিঃশর্তে নিজের নফস বা ইহলৌকিক লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ বা অপরের ক্ষতি বা অপরকে নিশ্চিহ্ন করার বাসনা থেকে মুক্ত, যারা বুদ্ধি, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও আল্লার রসুলের মারফত নাজিল হওয়া ওহিকে নশ্বর জীবনের একমাত্র সম্বল জ্ঞান করে সদা-সর্বদা সেই ওহির কাছেই হেদায়েতের জন্য আল্লার দাস হিসেবে নিঃশর্তে নতজানু ও গোলাম থাকেন— এই প্রতিবাদ ও সমাবেশ তাদের সবার জন্য।
সবাই এই প্রতিবাদসভা ও সরকারকে স্মারকলিপি প্রদান সমাবেশে হাজির থাকবেন— এই আশাবাদ ব্যক্ত করে ফরহাদ মজহার বলেন, যারা নিজের বুদ্ধি, বিবেক ও সামাজিকতার গুণে সমাজকে অগ্রসর করে এগিয়ে নিয়ে যান— ধর্ম, বিশ্বাস ও আস্তিক-নাস্তিক-নির্বিশেষে এই সমাবেশও তাদের জন্য।
তিনি বলেন, এই সভা থেকে আমরা আগামী দিনে আমাদের কর্তব্য ও কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেব। আমরা দীর্ঘকাল ধরে মাজার ভাঙার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছি, বাংলাদেশে ভক্তি, আশেকানি এবং অপরের প্রতি সহৃদয়তার মধ্য দিয়ে তর্কবিতর্ক মীমাংসার ওপর জোর দিয়ে সমাজে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে লড়ে যাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনক যে সরকার আমাদের প্রতিবাদে কর্ণপাত করছে না। এভাবে চলতে পারে না।
তিনি লিখেছেন, মহারাজ আবুল সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর মাজারকে গণপরিসর হিসেবে গড়ে তোলার একজন অগ্রণী সাধক। তিনি প্রতিটি সমাবেশে সব সময় আমাদের পাশে ছিলেন। তাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে তার বিরুদ্ধে মামলা না দেওয়ার অনুরোধ করেছি। তার কোনো শব্দ ব্যবহার কিংবা কোনো কথায় কেউ মনে কষ্ট পেলে তার হয়ে আমরা সবার কাছেই ক্ষমা চেয়েছি। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ঠিক করেনি।
তিনি আরো লিখেছেন, মানিকগঞ্জে বাউলদের যেভাবে পেটানো হলো এবং প্রাণের ভয়ে যাদের পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য করা হলো, তার কারণে আন্তর্জাতিকভাবে উপদেষ্টা সরকারের ভাবমূর্তির চরম ক্ষতি হলো। এর জন্য সামাজিক বিরোধ ও সংঘাত আলাপ-আলোচনার পরিবর্তে আইন ও দমন-পীড়নের পথ ব্যবহারই দায়ী। সংঘাত কিংবা আইন— সামাজিক বিরোধ মীমাংসার একমাত্র পথ হতে পারে না।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে