Views Bangladesh Logo

‘সরকার ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দলগুলোর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে’

‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫’ সংশোধিত প্রজ্ঞাপন বাতিল এবং ‘সহকারী শিক্ষক (সংগীত)’ ও ‘সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা)’ পদ দুটি পুনর্বহালের দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন, সমাবেশ ও প্রতিবাদী গানের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মসূচিতে অভিযোগ তোলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধর্মীয় কয়েকটি সাম্প্রদায়িক দলের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জেলা শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট রাধা রানী বর্মন।

বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) জেলা শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পল্টু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জেলা শাখার সভাপতি নিয়তি সরকার নিতু, সাধারণ সম্পাদক রিদম গোস্বামী বিভসহ আরও অনেকে।

বক্তব্যে সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, শিশুদের শারীরিকভাবে সুগঠিত ও মানসিকভাবে সুষম বিকাশের লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয় দুটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার হঠাৎ করেই এই দুটি বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের পদ বাতিল করেছে, যা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, সরকার কয়েকটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দলের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এই চিহ্নিত ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী তালেবানি ধাঁচে দেশের শিক্ষা কাঠামো গড়ে তুলতে চায়। তারা এমন একটি প্রজন্ম তৈরি করতে চায়, যারা সাংস্কৃতিকভাবে পঙ্গু ও মানসিকভাবে বিকল।

সভাপতির বক্তব্যে রাধা রানী বর্মন বলেন, গত বছর পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি বাতিল, এ বছরের শুরুতে ‘আদিবাসী’ শব্দ ও গ্রাফিতি সরিয়ে ফেলা-এসবই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর চাপে সরকারের নতজানু নীতির ফল। এরই ধারাবাহিকতায় এখন প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষকের পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নিয়তি সরকার নিতু বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ‘মব’ তৈরি করে মাজার-মন্দির আক্রমণ, ভাঙচুর, ভিন্ন মতাবলম্বীদের হত্যা, কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে ফেলা, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটিয়েই চলেছে। একদিকে শ্রমজীবী মানুষ তাদের রুটি-রুজির জন্য রাস্তায় নামলে লাঠি পেটা, শিক্ষকদের মিছিলে জলকামান ব্যবহার করছে সরকার। অন্যদিকে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার।

সমাবেশে বক্তারা সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান। সেইসাথে শিশু-কিশোরদের মানসিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক বিকাশের স্বার্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষকের পদ পুনর্বহালের আহ্বান জানান।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ