ইইউ বাজারে ইএসপিআরের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি প্রয়োজন
২০২৪ সালের জুলাই থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইকো-ডিজাইন ও টেকসই পণ্যবিধি (ইএসআর) কার্যকর হয়েছে। সমষ্টিগত উদ্যোগের অংশ হিসেবে এটি গৃহীত পদক্ষেপসমূহের একটি অংশ। পরিবেশ ও জলবায়ু লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি সার্কুলারিটি এবং জ্বালানি দক্ষতার উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ইইউ। তাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যেই এটি অর্জিত হবে। নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে অবশ্য এই বিধি ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হবে। যেমন বস্ত্রশিল্প ও ইস্পাত শিল্প।
ইএসপিআর-এ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে একাধিক নতুন পদক্ষেপ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্ট (ডিপিপি) চালু করা, অবিক্রীত ভোক্তা পণ্য ধ্বংস বন্ধে নিয়ম প্রণয়ন এবং সবুজ সরকারি ক্রয়নীতি অনুসরণের বাধ্যবাধকতা। কমপ্লায়েন্স থেকে প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতায় রূপান্তর নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগ এবং বেসরকারি খাতের আন্তরিক অংশগ্রহণ অপরিহার্য।
ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্ট (ডিপিপি) ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইকো-ডিজাইন ফর সাসটেইনেবল প্রোডাক্টস রেগুলেশনস (ইএসপিআর)-এর অধীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। এই টুলের মাধ্যমে একটি পণ্যের সম্পূর্ণ জীবনচক্রে টেকসই উন্নয়ন ও আইনগত আনুগত্য সম্পর্কিত তথ্য সংরক্ষণ ও অনুসরণ করা সম্ভব হবে। এই প্রক্রিয়ার ফলে প্রতিটি পণ্যের তথ্য ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও সুরক্ষিত হবে। একই সঙ্গে উৎপাদক, সরবরাহকারী, সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত সংস্থা এবং এমনকি ভোক্তাদেরও দায়বদ্ধতা বাড়বে। এই ব্যবস্থার কার্যকারিতার জন্য ডেটা ব্যবস্থাপনার আন্তঃসংযোগযোগ্যতা, সঠিক সংরক্ষণ, মেশিন-রিডেবল ফরম্যাট, মান নির্ধারণ এবং আইনগত বাধ্যবাধকতা হবে মৌলিক শর্ত।
বস্ত্র ও পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরেই পানি ও জ্বালানির মতো বিপুল পরিমাণ সম্পদের ব্যবহারকারী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। একই সঙ্গে এটি কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস বলেও ধরা হয়। তাই টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে সার্কুলার টেক্সটাইলস নীতি প্রণয়ন এখন অনিবার্য। বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন চাহিদা মেনে চলার পাশাপাশি উপযুক্ত দেশীয় সহায়ক নীতি গ্রহণ করতে হবে। এতে কেবল বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান বজায় রাখা সম্ভব হবে না বরং দেশের বস্ত্র ও পোশাকশিল্পের টেকসই ভবিষ্যৎও নিশ্চিত হবে।
২০২২ সালে বৈশ্বিক বস্ত্রবাজারের আকার ছিল প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩২ সালের মধ্যে এই বাজারের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ১.৪৪ ট্রিলিয়ন ডলার, বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি হবে ৩.৭৭ শতাংশ। শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নেই (ইইউ) ২০২২ সালে পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ১৯১.৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ২১ থেকে ২৩ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ জুতা, হিমায়িত খাদ্য ও কৃষিপণ্য রপ্তানি করে থাকলেও দেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৯০ শতাংশই বস্ত্র ও তৈরি পোশাক (RMG) খাতনির্ভর।
বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইইউতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ২১.৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে শুধু তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে ১৯.৭১ বিলিয়ন ডলার যা মোট রপ্তানির প্রায় ৯০ শতাংশ। বাকি অংশে রয়েছে গৃহসজ্জা বস্ত্র (০.৪০ বিলিয়ন ডলার), জুতা (০.৫০ বিলিয়ন ডলার), ওষুধশিল্প (০.০৩ বিলিয়ন ডলার) এবং কিছু ব্যাটারি রপ্তানি।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্রের (আটিসি) ট্রেড ম্যাপ অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ইইউতে ব্যাটারি ও অ্যাকুমুলেটর রপ্তানি করেছে মাত্র ০.০১২ বিলিয়ন ডলারের। অথচ ইইউর মোট ইলেকট্রনিকস ও ব্যাটারি আমদানি বাজারের আকার ১৪৬.৭৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এই খাতে বাংলাদেশের জন্য রয়েছে বৃহৎ বাজার সম্ভাবনা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই প্রণীত নীতিমালার আওতায় ২০২৬ সালের মধ্যে ব্যাটারি শিল্পে সর্বপ্রথম ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্ট চালু করবে। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য খাতও ধাপে ধাপে এই ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত হবে যা ইইউর টেকসই উন্নয়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাটারি রপ্তানি খুব বেশি নয়। তবে ইউরোপীয় বাজারে এই খাতের বৃহৎ চাহিদা ও সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে বলা যায়, অনুবর্তিতা নিশ্চিত করা এখন অপরিহার্য। ধীরে ধীরে ইলেকট্রনিকস, নির্মাণ, বস্ত্র ও ব্যাটারিসহ বিভিন্ন খাতে সার্কুলার অর্থনীতি গড়ে তোলার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ডিপিপি বাস্তবায়ন বাড়ানো হবে।
ইইউর ডিপিপি স্থাপনের পরিকল্পনা পাঁচটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিভক্ত। এগুলো হলো টেক্সটাইল মূল্য শৃঙ্খলে ট্রেসেবিলিটি এবং স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীল ক্রয় প্রচারের জন্য ভোক্তাদের সচেতনতা, পুনঃব্যবহার এবং ক্লোজড-লুপ পুনর্ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে তথ্য বিনিময়, প্রভাব মূল্যায়ন যাতে টেকসইতা নিশ্চিত করা যায় সেজন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং অবশেষে নাগরিক, ব্যবসা এবং সর্বোপরি প্রতিযোগিতামূলকতা বজায় রাখার জন্য ইইউ স্বার্থকে উৎসাহিত করা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের সুনির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণা করেছে। ২০২৭ সালের মধ্যে ন্যূনতম ও সরলীকৃত ডিপিপি চালু হবে। এ সময়ে মূলত প্রাথমিক তথ্যভাণ্ডার, মৌলিক ট্রেসেবিলিটি এবং আইনগত কাঠামোর প্রাথমিক অনুবর্তিতা কার্যকর করা হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নতমানের DPP বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। তখন ডেটাসেট বিস্তৃত হবে, স্টেকহোল্ডারদের তথ্য আদান-প্রদান বাড়বে এবং সার্কুলারিটির পথে অগ্রসর হবে। ২০৩৩ সালে পূর্ণাঙ্গ সার্কুলার ডিপিপি কার্যকর হবে। এই সময়ে একটি পণ্যের সম্পূর্ণ জীবনচক্রের তথ্য একীভূত করা হবে এবং উচ্চমাত্রায় পুনঃব্যবহার, পুনর্ব্যবহার ও নীতিগত সামঞ্জস্য নিশ্চিত করা হবে।
বাংলাদেশে সমগ্র সরবরাহ শৃঙ্খল এবং পণ্যের জীবনচক্রজুড়ে স্বচ্ছতা আনতে, নিরাপদ বিনিময় ব্যবস্থাকে সমর্থন করার জন্য ডেটা ভাগাভাগি কৌশলগুলো তৈরি করা প্রয়োজন। দেশে অস্পষ্ট জীবনচক্রসহ অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি কাজটিকে কঠিন করে তুলবে। এই ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডগুলোকে তাদের সরবরাহকারীদের শিক্ষিত করার জন্য কিছু দায়িত্ব বহন করতে হবে।
শিল্প খাতে ডেটা ক্লাউড, ডেটা মার্কেটপ্লেস এবং ইন্টারনেট অব থিংস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সেক্টর ও সিস্টেমগুলোর আন্তঃসংযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পুরো সরবরাহ শৃঙ্খলের সমস্ত অংশীদারের জন্য শেখার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক দক্ষতা এবং ইন্টারঅপারেবল ও মেশিন-রিডেবল ডেটা ফরম্যাট শক্তিশালী করতে হবে। বাংলাদেশকে দায়িত্বশীল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সক্রিয়ভাবে যুক্ত করতে হবে এবং এ জন্য শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অপরিহার্য।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জিআইজির একটি সেমিনারে জানানো হয়, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯২ মিলিয়ন টন বস্ত্রবর্জ্য উৎপন্ন হয়। বর্তমানে বস্ত্রবর্জ্য বিশ্বের ল্যান্ডফিলের মোট বর্জ্যের কমপক্ষে ৭ শতাংশ অংশ গঠন করে। গড়ে একজন মানুষ বছরে প্রায় ১১.৪ কেজি পোশাক ব্যবহার করেন যার ফলে প্রতি জনে ৪৪২ কেজি কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন হয়।
ডিপিপি একটি পণ্যের জীবনচক্রজুড়ে স্থায়িত্ব, সার্কুলারিটি এবং আইনি সম্মতির ক্ষেত্রে তথ্য ট্র্যাক করার জন্য একটি কাঠামো হিসেবে কাজ করবে। এটি পণ্যের তথ্যের একটি সংগ্রহ যা সাধারণ তথ্য, লেবেল এবং সার্টিফিকেশন, কার্বন পদচিহ্ন, সরবরাহ শৃঙ্খলের যথাযথ পরিশ্রম, উপকরণ এবং গঠন, সার্কুলারিটি এবং সম্পদের দক্ষতা, কর্মক্ষমতা এবং স্থায়িত্বকে অন্তর্ভুক্ত করে। ডিপিপি উৎপাদন শিল্পে স্বচ্ছতা এবং ট্রেসেবিলিটির দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সমাধান করবে যা মূল্য শৃঙ্খলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করবে। তবে এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা এবং শেখার জন্য বাংলাদেশের সময় প্রয়োজন।
ডিপিপির জন্য যে ডেটা স্পেস তৈরি হবে তা বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে অর্থাৎ তথ্যের অখণ্ডতা, গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য ডেটা গভর্ন্যান্স, ডেটা স্ট্যান্ডার্ড, নিরাপত্তা প্রোটোকল এবং অন্যান্য নির্দেশিকা মেনে চলা আবশ্যক। সম্পূর্ণ ডেটা ইকোসিস্টেম অবশ্যই অন্তঃসংযুক্ত উৎসসমূহ নিয়ে গঠিত হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা নির্দিষ্ট খাত বা শিল্পের মধ্যে থাকতে হবে। ব্যক্তিরা, প্রতিষ্ঠান ও সরকারকে অবশ্যই তাদের ডেটার ওপর নিয়ন্ত্রণের অধিকার থাকতে হবে যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত- ডেটা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, শেয়ারিং এবং ব্যবহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত।
ডেটার ইন্টারঅপারেবিলিটি এবং সাধারণ নিয়মাবলী থাকা জরুরি, যাতে বিভিন্ন এন্ড-পয়েন্ট সংযুক্ত থাকে। ডিপিপি সমাধানের জন্য একটি গঠনমূলক, বিকেন্দ্রীকৃত পরিবেশ প্রয়োজন হবে যা বিশ্বাসযোগ্য ডেটা শেয়ারিং ও আদান-প্রদানকে সহায়তা করবে। এই সমাধানের জন্য ক্লাউড কম্পিউটিং এবং ইন্টারনেট অব থিংস প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। বাংলাদেশকে এসব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা ও প্রস্তুতি থাকতে হবে এবং সরকারের উচিত রপ্তানি ও ডেটা ব্যবস্থাপনা নীতিমালার মাধ্যমে সমস্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা।
এই উদ্যোগ একটি স্পষ্ট সময়রেখা নির্ধারণ করেছে। ব্যাটারি শিল্প প্রথমে ডিপিপি বাস্তবায়ন করবে যা ২০২৬-২৭ সালের মধ্যে কার্যকর হবে, ইইউ ব্যাটারি রেগুলেশন ২০২৩/১৫৪২ অনুযায়ী। এরপর অন্যান্য খাত ধাপে ধাপে ডিপিপি বাস্তবায়ন করবে, ইএসপিআর ইইউ ২০২৪/১৭৮১-এর নিয়ম অনুযায়ী। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের টেকসই উন্নয়ন ও দায়িত্বশীল প্রক্রিয়া প্রয়োগে অঙ্গীকার প্রমাণ করে। ডিপিপি বাস্তবায়নের জন্য দায়ী ব্যক্তিরা হলেন উপাদান সরবরাহকারী, নির্মাতা, পরিবেশক/আমদানিকারী, ভোক্তা, সরকার এবং সরকারি কর্তৃপক্ষ, মেরামত/পুনঃনির্মাতা এবং পুনর্ব্যবহারকারী।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিমালা অনুযায়ী, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৭ থেকে, বাজারে রাখা বা ব্যবহারিকভাবে প্রদান করা প্রতিটি এলএমটি ব্যাটারি, ২ কিলোওয়াট-ঘণ্টার বেশি ক্ষমতার প্রতিটি শিল্প ব্যাটারি এবং প্রতিটি বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যাটারির জন্য ইলেকট্রনিক রেকর্ড (ব্যাটারি পাসপোর্ট) থাকা বাধ্যতামূলক। এই পাসপোর্টে অন্তর্ভুক্ত থাকবে- ব্যাটারি মডেল সম্পর্কিত তথ্য, পৃথক ব্যাটারির জন্য নির্দিষ্ট তথ্য, যার মধ্যে ব্যাটারির ব্যবহার থেকে উদ্ভূত তথ্যও অন্তর্ভুক্ত হবে, এই তথ্য সর্বসাধারণের জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য হতে হবে, যাতে সব সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। কিছু তথ্য নোটিফাইড বডি, যেমন মার্কেট সার্ভেল্যান্স কর্তৃপক্ষের জন্য সীমিতভাবে অ্যাক্সেসযোগ্য থাকবে। ব্যাটারি ডিসমন্টলিং বা ভাঙচুরের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যার মধ্যে আইনগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত।
ব্যাটারি পাসপোর্ট কিউর কোড বা আরফিআিইডির মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য হবে যা একটি স্বতন্ত্র শনাক্তকারী এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। এই শনাক্তকারী যে অর্থনৈতিক সংস্থা ব্যাটারি বাজারে প্রদান করছে তারা নির্ধারণ করবে। ব্যাটারি বাজারে প্রদানকারী অর্থনৈতিক সংস্থার দায়িত্ব থাকবে যে, ব্যাটারি পাসপোর্টে থাকা তথ্য সঠিক, পূর্ণাঙ্গ এবং সর্বশেষ অবস্থায় থাকবে।
যে কোনো ব্যাটারি পুনঃব্যবহারের জন্য প্রস্তুতকরণ, পুনঃপ্রস্তুতি, পুনঃউদ্দেশ্যায়ন বা পুনঃনির্মাণের আওতায় আসে, তার দায়িত্ব সেই অর্থনৈতিক সংস্থার ওপর স্থানান্তরিত হবে যা ব্যাটারিটি বাজারে প্রদান করেছে বা ব্যবহারিকভাবে প্রদান করেছে। ডিপিপি নতুন একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রপ্তানিকারীদের জন্য উদ্ভূত হয়েছে। তবে, কিছু বড় কর্পোরেট বস্ত্রশিল্প প্রতিষ্ঠান নতুন চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা রাখে। এর মধ্যেও, রপ্তানি খাতের জন্য বিভিন্ন নতুন ধরনের সহায়তা ও সমর্থন বাধ্যতামূলক হবে। বাংলাদেশের ইইউতে ধারাবাহিক রপ্তানির জন্য সরকার ও বেসরকারি খাতের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ক্ষমতা উন্নয়ন অপরিহার্য।
ফেরদৌস আরা বেগম: অর্থনীতিবিদ এবং প্রধান নির্বাহী, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে