১৭ নারীকে বিয়ের অভিযোগে সেই বন কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
প্রতারণার মাধ্যমে ১৭ জন নারীকে বিয়ের অভিযোগে অবশেষে বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
একই আদেশে, পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপ-বন সংরক্ষক) ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান মিঞাকে বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানা গেছে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি দায়িত্ব বুঝে নেবেন।
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় উপকূলীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি ই-মেইল পেয়েছি।
জানা গেছে, কবির হোসেন পাটোয়ারী বিভিন্ন নারীকে বিদেশে পড়াশোনা, সরকারি চাকরি, বিমানবালা হিসেবে চাকরি, কিংবা সম্পত্তি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ১৪ থেকে ১৭ জন নারীকে বিয়ে করেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী নারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বরিশাল নগরীর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সভা করেন। এ সময় ঢাকার নাজনীন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার এবং খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ একাধিক নারী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন।
এদিকে এই একাধিক বিয়েকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বরিশালের আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে। বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট হাফিজ আহমেদ বাবলু স্ব-প্রণোদিত হয়ে মেট্রোপলিটন প্রথম আমলি আদালতে মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী অ্যাডভোকেট হাফিজ আহমেদ বাবলু জানান, বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা। তিনি এর আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালে ১৭টি বিয়ে ও বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি।
তিনি আরও জানান, আসামি বন কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী প্রতিটি বিয়ের ক্ষেত্রে মুসলিম পারিবারিক আইনের ১৯৬১ এর ৬ ধারার বিধান লঙ্ঘন করে অধ্যাদেশ ৬ (৫) এর (খ) ধারার অপরাধ করেছেন। এছাড়া প্রথম বিয়ের পর তা গোপন রেখে এক এক করে ১৭টি বিয়ে করে তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধ, দেশীয় সংস্কৃতি এবং আমাদের সমাজব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে গুরুতর অপরাধ করেছেন।
এ ব্যাপারে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রাজিব মজুমদার জানান, আদালত অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবুল দায়ের করা মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ নভেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে