মারাত্মক ঝুঁকিতে লা মেরিডিয়ান সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজ, সংস্কারে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

রাজধানীর খিলক্ষেত-নিকুঞ্জ এলাকার লা মেরিডিয়ান হোটেল সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজটি দুই মাস ধরে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে ক্রেনবাহী একটি ট্রাকলরির ধাক্কায় ব্রিজটি বেঁকে যায়। এরপর থেকে ব্রিজটি বিপজ্জনকভাবে হেলে থাকলেও সংস্কার বা মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটি পার হচ্ছেন।

এ অবস্থায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে এলাকাবাসী। শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে ‘খিলক্ষেত-নিকুঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে তারা এক প্রতিবাদী নাগরিক সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করেন। নিকুঞ্জ, টানপাড়া, জামতলা, পুরাতন বাজার, সরকারবাড়ি, নামাপাড়া, লেকসিটি ও খাঁপাড়া এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এতে অংশ নেন। তারা ৫ দফা দাবিও জানায়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে কর্তৃপক্ষের মিথ্যা আশ্বাস শুনে আমরা ক্লান্ত। ব্রিজটির বর্তমান অবস্থা ভয়াবহ। যেকোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় কে নেবে?”

তারা অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। এই সময়ের মধ্যে সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন বক্তারা।

বক্তাদের অভিযোগ, শুধু লা মেরিডিয়ান নয়, খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফুটওভার ব্রিজটিও ভগ্নদশায় পড়েছে। দুটি ব্রিজই দ্রুত সংস্কার এবং ভবিষ্যতের জন্য আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তারা।

তাদের ভাষায়, “আর নয় ঝুঁকিতে চলাচল, এবার চাই নিরাপদ ও স্থায়ী সমাধান।”

এলাকাবাসীর মতে, এই আন্দোলন প্রমাণ করেছে সাধারণ মানুষ এখন নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনেও নামতে প্রস্তুত।

আন্দোলনকারীদের পাঁচ দফা দাবি হলো- ব্রিজের অবিলম্বে সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ; পথচারীদের নিরাপদ চলাচলের জন্য ফুটওভার ব্রিজটি পাশের রেললাইন পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা; ব্রিজের উভয় পাশে সিঁড়ি প্রশস্ত করতে হবে এবং ছাউনিযুক্ত অপেক্ষা স্থান তৈরি করতে হবে; প্রতিবন্ধী ও প্রবীণদের জন্য র‍্যাম্প বা লিফট স্থাপন এবং ব্রিজে পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা ও সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থায়ী মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে।

সমাবেশে বক্তব্য দেন জিয়াউর রহমান, রিশাদ মাহমুদ, রিদওয়ান আলভী, আহমেদ সুলতান, মুকুল হোসেন মৃধা, মো. জায়েদুল হক, এ এম আইয়ুব, ইঞ্জিনিয়ার মাইন উদ্দিন জাহাঙ্গীর, মো. জাকির ভূঁইয়া, মো. সলিমুল্লাহ, ইমানুল হক, শামস সোহেল, ওয়াহিদুজ্জামান সুমন, নুরুল আমিন মজুমদার, মো. সাইফুল ইসলাম ও রহমতউল্লাহ রাহাত প্রমুখ।

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ইঞ্জিনিয়ার মো. নজরুল ইসলাম।