থানা ব্যারাকে নারী পুলিশকে ধর্ষণের ঘটনায় ওসির বিরুদ্ধে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় কনস্টেবল সাফিউর রহমানের বিরুদ্ধে এক নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আখতার হোসেন এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
সূত্রের খবর, রমজান মাসে থানার দ্বিতীয় তলার নারী ব্যারাক খালি থাকার সময় এই ঘটনা ঘটে। ওসির ব্যক্তিগত দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত কনস্টেবল সাফিউর রহমান ওই নারী সদস্যকে একটি কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন এবং তার মোবাইল ফোনে ঘটনাটি রেকর্ড করেন। ভুক্তভোগী দাবি করেন, অভিযুক্ত রহমান তাকে ঘটনা প্রকাশ করলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন।
একাধিকবার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানাতে চাইলেও ওসি কোনো ব্যবস্থা নিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী সদস্য। পরে তিনি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান এবং আত্মহত্যার হুমকি দেন। এরপর সাফিউর রহমান তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন, যা পরে তিনি পালন করেননি। ১৬ আগস্ট ভুক্তভোগী গোপনে এসআই মো. ইবনে ফারহাদকে বিষয়টি জানান, যিনি বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেন।
অভিযোগ রয়েছে, ধর্ষক রহমানের গ্রামের কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আল-আমিন। তিনি শুরু থেকেই অভিযুক্তের পক্ষ নিলে বিপাকে পড়েন ওই নারী।
থানা সূত্রে জানা যায়, অন্য নারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে রহমানের অসদাচরণের ইতিহাস রয়েছে।
সূত্রে আরও জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে আশুলিয়া থানা থেকে বদলি হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় আসেন ওই নারী পুলিশ। তার দাবি, যোগদানের পর থেকেই সাফিউর রহমান তাকে হয়রানি শুরু করেন। গত ১৭ আগস্ট ওসিকে মামলা নেয়ার অনুরোধ করেন তিনি, কিন্তু প্রত্যাখ্যান করেন ওসি। এরপর তিনি ঢাকা জেলার পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তখন ধর্ষণের ঘটনাটি জানাজানি হয়। ঘটনাটি মীমাংসার জন্যে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পুলিশ।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত কনস্টেবল রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, আমার থানায় এক নারী পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনা হয়েছে। ওই নারী পুলিশ সদস্য আমার কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। আমরা দুইজনকে পুলিশ লাইনে বদলি করেছি। এখন বিষয়টি ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার তদারকি করছেন। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আমার বডিগার্ড ছিলেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি তারা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে