ময়মনসিংহে হত্যার পর শিশুপুত্রকে ঘরের ভেতরে পুঁতে রাখেন বাবা
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুই বছরের শিশুপুত্রকে শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর নিজ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক বাবার বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৮ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে পশ্চিম ধুরাইল এলাকা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাবা নুরুল আমিনকে (৩০) আটক করা হয়েছে। শিশুটির নাম আইয়ুব আলী। তার বাবা উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের পশ্চিম ধুরাইল গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত নুরুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। বুধবার বেলা ৩টার দিকে হঠাৎ করে তিনি স্ত্রী জেসমিনকে মারধর করেন এবং শিশু আইয়ুব আলীকে টেনে-হিঁচড়ে নিজ ঘরে নিয়ে যান। এরপর প্রায় চার ঘণ্টা কাউকে ঘরের কাছে যেতে দেননি। কেউ কাছে এলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন। এতে পরিবারের সদস্যরা পাশের বাড়িতে সরে যায়।
সন্ধ্যার পরও শিশুটির কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় সন্দেহ দানা বাঁধে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় পরিবারের লোকজন ঘরে প্রবেশ করে শিশুটিকে খুঁজতে থাকেন। ঘরের এক কোণে মাটি খোঁড়া দেখে সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরক্ষণেই তিনি স্বীকার করেন—নিজের ছেলেকে হত্যা করে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছেন।
এমন স্বীকারোক্তির পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয়রা নুরুল আমিনকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। রাত ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গর্ত খুঁড়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, শিশুটির মাথা ও কানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত শিশুর দাদা ফজলুল মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। আমরা বাসায় ছিলাম না। বিকেলে শুনি সে তার স্ত্রীকে মারধর করেছে আর নাতিকে নিয়ে গেছে। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখি সে নাতিকে মেরে মাটিচাপা দিয়েছে।’
এ ব্যাপারে হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাগর সরকার বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং অভিযুক্ত বাবা নুরুল আমিনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তাধীন, আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে