পোশাক শ্রমিকের আত্মহত্যার জেরে গাজীপুরে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ

গাজীপুরে পোশাক শ্রমিক জাকিরের আত্মহত্যার প্রতিবাদে সহকর্মীদের বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশের লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেলে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন বলে দাবি শ্রমিকদের।

সোমবার (২ জুন) রাতে কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন শ্রীপুরের নয়নপুর নিউমার্কেট এলাকার জিন্নাত নিটওয়্যারের শ্রমিক মো. জাকির হোসেন (৩০)।

জাকির নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাদেছিরাম গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর রাত নয়টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সহকর্মীদের অভিযোগ, জাকির কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চাইতে গেলে তাকে তা নাকচ এবং তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়। এই অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।

তবে কারখানার এজিএম জুবায়ের বাসারের দাবি, পারিবারিক সমস্যায় হতাশায় ভুগছিলেন জাকির। তার আত্মহত্যার সাথে কাজের সম্পর্ক নেই।

জাকিরের মৃত্যুর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে কারখানা প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের চেষ্টা চালান বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। তাদের হামলায় একটি সাঁজোয়া যানে (এপিসি) ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়।

কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়ে ও লাঠিচার্জে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এরপর শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনীও।

শ্রমিকদের অভিযোগ, পুলিশ পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে তাদের অর্ধশতাধিক সহকর্মীকে আহত করেছে।

বিক্ষোভকারী শ্রমিক মামুন বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী জাকির কারখানা কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারে আত্মহত্যা করেছেন। আমাদের উদ্বেগের সমাধানের বদলে আমাদের ওপরই কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ’।

কারখানা কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের দুর্ব্যবহার এবং পুলিশের কঠোরতার নিন্দা জানান আরেক শ্রমিক কায়সারও।

অন্যদিকে পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, শ্রমিকরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীদের ওপর হামলা শুরু করেছিলেন।

শিল্পপুলিশের শ্রীপুর সাব-জোনের কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বলেন, শ্রমিকরা একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।

শ্রমিকের মৃত্যু এবং পরবর্তী অশান্তির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ বলেছেন, নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন তারাও।