Views Bangladesh Logo

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের বিদ্যুৎ আগামী বছরই গ্রিডে সরবরাহ হবে: রুশ রাষ্ট্রদূত

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের (রূপপুর এনপিপি) বিদ্যুৎ আগামী বছরের মধ্যেই গ্রিডে সরবরাহ শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি খোজিন।

তিনি জানান, আমরা আশা করছি আগামী বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের বিদ্যুৎ গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা যাবে। এটি প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে এবং পূর্ণমাত্রায় বাণিজ্যিক পরিচালনার জন্য এর প্রস্তুতি নিশ্চিত করবে। স্থাপনাটি কমিশনিংয়ের লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছি এবং পরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হচ্ছি।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানে রাশিয়ান দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প (রূপপুর এনপিপি) নিয়ে বিস্তারিত বলেন।

রূপপুর এনপিপি নিয়ে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের কাজের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইউনিট–১-এর কমিশনিং, যা এখন প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রয়োজনীয় চূড়ান্ত কাজ ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র প্রস্তুত ও বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বর্তমানে একগুচ্ছ কার্যক্রম একসঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে চূড়ান্ত নির্মাণ ও স্থাপন কাজ, স্টার্টআপ ও অ্যাডজাস্টমেন্ট কার্যক্রম, বাধ্যতামূলক পরীক্ষা ও নির্দেশনা সম্পন্ন করা এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনপত্র সংগ্রহ।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প ঘিরে পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে প্রকল্প তহবিল ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত খবরের কাগজের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের মন্তব্য হলো- প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও যথাযথ নথিপত্র সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে সব ধরনের কাজের জন্য মাইলস্টোন অর্জন সনদ গ্রহণ ও স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে, পাশাপাশি যন্ত্রপাতি উৎপাদন ও সরবরাহ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে দেশটির রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বা উল্লিখিত অভিযোগগুলো সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করার অবস্থানে আমরা নেই।

আলেকজান্ডার খোজিন বলেন, বাংলাদেশে সবসময়ই গ্রাহক পক্ষ ও তদারকি সংস্থাগুলোর তরফ থেকে রুশ পক্ষের সঙ্গে সহযোগিতার মানসিকতা এবং আমাদের যৌথ প্রকল্প, অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার আগ্রহ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।

এনপিপির ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পুনঃতফসিল করে ২০২৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে জানিয়ে আলেকজান্ডার খোজিন বলেন, চলতি বছরের জুলাই মাসে উভয়পক্ষ আন্তঃসরকারি ঋণচুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রেক্ষিতে মূল ঋণের পরিশোধ সূচি সমন্বয়ে একমত হয়েছে। এর ফলে মূল ঋণ পরিশোধের সময়সীমা এক থেকে দেড় বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত জানান, রাশিয়া ও বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীদের অনুমোদিত সংশোধনী প্রটোকল অনুযায়ী, ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তি এখন ২০২৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিশোধযোগ্য হবে। আন্তঃসরকারি ঋণচুক্তি ও এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) মেয়াদ বাড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের জন্য রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ সুবিধা নবায়নের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে, যা প্রকল্পের আর্থিক কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চালু রাখতে সহায়ক হয়েছে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ