মহাসড়কে ঈদযাত্রায় চরম ভোগান্তি, বাড়তি ভাড়ার নৈরাজ্য

ঈদযাত্রায় সাভার ও আশুলিয়ার বাসস্ট্যান্ডগুলোতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঘরমুখী লাখো মানুষ। বাসের তীব্র সংকট, টিকিট না মেলা, পেলেও বসার সিট না পাওয়া এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ তুলছেন তারা।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গাড়ি না মেলায় হতাশ যাত্রীরা। লোকাল যাত্রীদের অনেকে হেঁটেই রওনা দিচ্ছেন গন্তব্যে।

বৃহস্পতিবার (৫ই জুন) সকাল থেকেই সাভারের নবীনগর, বাইপাইল এবং আশুলিয়ার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে ছিল উপচেপড়া ভিড়। দূরপাল্লার বাসগুলোর জন্য লম্বা লাইন থাকলেও কাঙ্খিত বাস আসছে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা পরে। যারা আগে থেকে টিকিট কেটে রেখেছিলেন অথবা অতিরিক্ত মূল্যে টিকিট সংগ্রহ করেছেন, তারাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন।

বাসের এই সংকটময় পরিস্থিতির সুযোগে কিছু অসাধু পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে দেড় থেকে দুগুণ বেশি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।

নবীনগর-চন্দ্রা রুটের একটি বাসের কাউন্টার মাস্টার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'গাড়ির অনেক চাপ। কিছু গাড়ি বিকল হয়ে গেছে। তাই সিডিউল এলোমেলো হয়ে গেছে। আর ভাড়ার বিষয়টা উপর থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়, আমরা কী করবো'।

রংপুরগামী যাত্রী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, 'আমি এক সপ্তাহ আগে হানিফ পরিবহনের টিকিট কেটেছিলাম। সকাল দশটার বাস, দুপুর তিনটার পরে এসেছে। কাউন্টারে এসে শুনি, বাস নাকি যানজটে আটকে আছে। পরিবার নিয়ে সমস্যায় পড়েছি'।

কুমিল্লাগামী যাত্রী রুবিনা আক্তার বলেন, 'আমার ছোট বাচ্চা আছে, টিকিট পাইনি। ভেবেছিলাম, দাঁড়িয়ে হলেও যাবো। কিন্তু বাস আসছেই না। যে দু-একটা আসছে, সেগুলোতেও তিল ধারণের জায়গা নেই। আমরা এক ধরনের জিম্মি হয়ে আছি'।

ভোগান্তিতে পড়েছেন লোকাল বাস ও গণপরিবহনের যাত্রীরাও। যানবাহন সংকটে অনেকে হেঁটেই রওনা হয়েছেন নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে।

সাভারের বাইপাইল থেকে ধামরাইগামী এক যাত্রী বলেন, 'বাসের জন্য আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। ভাড়া বেশি চাচ্ছে, বাসেও উঠতে দিচ্ছে না। তাই হেঁটেই যাচ্ছি'।

ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি কমাতে সাভার হাইওয়ে পুলিশ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহম্মেদ।

তিনি বলেন, 'আমরা যানজট নিরসনে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। গাড়ির সংকট ও বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ আমরাও পেয়েছি। যাত্রীরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি'।

ওসি বলেন, 'অনেক সময় যানজটে গাড়ি সময়মতো পৌঁছাতে পারছে না। ফলে সিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। আমরা কাউন্টারগুলোতে মনিটরিং করছি, যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা না হয়'।