ইউএনডিপি ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‌‘ব্যালট প্রকল্পে’ চুক্তি করেছে ইসি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ‘দ্য ব্যালট’ নামক একটি প্রকল্পের আওতায় আর্থিক সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার এবং বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি উপস্থিত ছিলেন।

ইসি সিনিয়র সচিব মো. আখতার হামিদ জানান, ইউএনডিপি নির্বাচনের জন্য ১৮.৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তা দেবে। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া নিজস্ব মুদ্রায় ২০ লাখ ডলারের সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই প্রকল্প চলবে ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রকল্পটির আওতায় ১৬টি মূল কার্যক্রম (কম্পোনেন্ট) অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে: সক্ষমতা উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি। সচিব আশা প্রকাশ করেন, দাতাগোষ্ঠীর সহায়তায় প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে।

তিনি আরও জানান, ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ইউএনডিপি অতীতেও ল্যাপটপ, স্ক্যানার, ক্যামেরা ও অফিস সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় নতুন এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো।

অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার সুসান রাইলি বলেন, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘদিনের বন্ধু ও অংশীদার। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়ে অস্ট্রেলিয়া গর্বিত। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের পাঁচ কর্মকর্তাকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, “আজ আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, অস্ট্রেলিয়া ‘দ্য ব্যালট’ প্রকল্পে সরাসরি ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার সহায়তা দিচ্ছে। জাতিসংঘ, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো ও ইউএন উইমেনের যৌথভাবে পরিচালিত এই প্রকল্প নির্বাচনী স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।”

ইউএনডিপির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার জানান, নির্বাচন কমিশন গঠনের কিছুদিন পরেই ইসি জাতিসংঘের সহায়তা চায়। এরপর জাতিসংঘ একটি ‘নিড অ্যাসেসমেন্ট মিশন’ প্রেরণ করে এবং সুপারিশের ভিত্তিতে এই ‘ব্যালট প্রকল্প’ প্রণয়ন করা হয়।

তিনি বলেন, “এই প্রকল্প বাস্তবায়নে জাতিসংঘ, নির্বাচন কমিশন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ একসঙ্গে কাজ করছে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম দাতা দেশ হিসেবে এ প্রকল্পে যুক্ত হওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ। অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।”

এই উদ্যোগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করা এবং একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।