ঢাবিতে হেনস্তার পর ক্যাম্পাস ছাড়লেন অধ্যাপক জামাল উদ্দীন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও আওয়ামীপন্থি নীল দলের শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দীন নিজ বিভাগে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হেনস্তার শিকার হয়ে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে এই ঘটনা ঘটে। এসময় একই বিভাগের আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষক অধ্যাপক জিনাত হুদাও তার সঙ্গে ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আ ক ম জামাল এবং জিনাত হুদাসহ কয়েকজন শিক্ষক দুপুরে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে যান। খবর পেয়ে অনুষদ ভবনের সামনে জড়ো হন একদল শিক্ষার্থী। বেলা ১টার দিকে তারা ভবন থেকে বের হলে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়েরের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা আ ক ম জামালকে ধাওয়া করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, জুবায়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সিঁড়িতে অধ্যাপক জামালের পোশাক ধরে তাকে আটকে রাখার চেষ্টা করছেন। নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টায় জামাল তার হুডি খুলে ফেলেন এবং সিঁড়ি দিয়ে নেমে দৌড়ে পালান। এরপর জুবায়ের তাকে ধাওয়া করেন।
এক পর্যায়ে অধ্যাপক জামাল একটি গাড়িতে উঠে পড়েন। তখনও জুবায়ের গাড়ির দরজা টেনে ধরে তাকে নামানোর চেষ্টা করছিলেন।
পরে ফেসবুকে এক পোস্টে জুবায়ের দাবি করেন, ‘স্বঘোষিত রাজাকারের বাচ্চাগুলোরে ব্রাশফায়ার দিতে হবে বলা আ ক ম জামাল, নীল দলের পোস্টেড নেতা জিনাত হুদাসহ পাঁচজন শিক্ষক ক্যাম্পাসে গোপন বৈঠক করছিলেন। খবর পেয়ে আমরা তাদের ধরার চেষ্টা করি। কিন্তু আগে থেকে প্রস্তুত গাড়িতে করে পালিয়ে যায়।’
তিনি আরও লেখেন, ‘ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট করেছে। তারপরও তারা কীভাবে ক্যাম্পাসে আসার সাহস পায়! খুনিদের সঙ্গে কোনো সহাবস্থান নয়—সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
এ বিষয়ে মতামত জানতে অধ্যাপক আ ক ম জামাল ও অধ্যাপক জিনাত হুদাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা সাড়া দেননি। এবি জুবায়ারের কাছেও ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সেদিন আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না। তবে আগেও জামাল স্যার ক্যাম্পাসে এলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছিল। তখন আমরা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করি যে তিনি আর আসবেন না। আমরা তাকে না আসতেও বলেছিলাম। তারপরও তিনি এসেছেন।’
কোন পাঁচজন শিক্ষক ‘গোপন মিটিং’ করছিলেন—এ প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, ‘আমি বাইরে ছিলাম, নিশ্চিত নই। তবে একটি ভিডিওতে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের আজমল স্যারকে দেখেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে