মরে প্রমাণ করা লাগবে আমরা যে অসুস্থ: আদালতে দীপু মনির প্রশ্ন
জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত একটি হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানির সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি আদালতকে প্রশ্ন করেছেন, ‘আমাদের কি মরে প্রমাণ করতে হবে যে আমরা অসুস্থ?’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাকে হাসপাতালে নেয়া হবে বলে আদালত চত্বরে আনা হয়েছে, কিন্তু এখন দেখছেন ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে।
আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। গত বছর শাহবাগ থানার ঝুট ব্যবসায়ী মনির হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাইনুল ইসলাম খান পুলক দীপু মনির ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আসামি দীপু মনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে হত্যার জন্য তিনি সরাসরি হাসিনা সরকারকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাকে হাসপাতালে নেয়া হবে বলে আদালত চত্বরে আনা হয়েছে, কিন্তু এখন দেখছেন ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে।
পিপি ফারুকী যুক্তি দেখান, আসামিদের প্রত্যক্ষ মদদেই এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। সরকারকে তারা কী কী পরামর্শ দিয়েছেন এবং কেন এ হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটানো হয়েছিল—সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য দীপু মনিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
দীপু মনির আইনজীবী রিমান্ড বাতিলের পক্ষে শুনানিতে বলেন, দীপু মনি একজন নারী এবং জুলাই আন্দোলনের সময় তার দায়িত্ব ছিল সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে। তিনি দাবি করেন, এ মামলার সঙ্গে দীপু মনির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং শুধু হয়রানির উদ্দেশ্যে তাকে এসব মামলায় জড়ানো হয়েছে। এর আগেও তাকে কয়েকবার রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, তাই নতুন করে রিমান্ডে নেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
আইনজীবী পক্ষের বক্তব্য শেষে দীপু মনি আদালতের অনুমতি নিয়ে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করেন। অনুমতি পেলে তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমি অসুস্থ। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। কিন্তু কারাগারে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আমাদের সাবেক মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন চারবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মারা গেছেন। আমাদেরও কি মরে প্রমাণ করতে হবে যে আমরা অসুস্থ?’
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী পাল্টা মন্তব্য করে বলেন, ‘দীপু মনির গলার আওয়াজই প্রমাণ করে দেয় তিনি কতটুকু অসুস্থ। সত্যিকারে তিনি সুস্থই আছেন।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর দীপু মনি আদালতের অনুমতি নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে