আগুন–ককটেল হামলাকারীকে গুলির নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের
যানবাহনে অগ্নিসংযোগ বা ককটেল নিক্ষেপ করতে এলে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনারও একই ধরনের নির্দেশনা দেন, যা নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
রোববার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে এক বেতার বার্তায় কমিশনার এ নির্দেশনা দেন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির অপরাধ বিভাগের একজন উপকমিশনারসহ তিনজন কর্মকর্তা। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে চাননি।
জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ওয়্যারলেসে বলেছি যে কেউ বাসে আগুন দিলে, ককটেল মেরে জীবনহানির চেষ্টা করলে তাকে গুলি করতে। এটা আমাদের আইনেই বলা আছে।’
একজন উপকমিশনার জানান, ‘স্যারের মেসেজটা ছিল যদি কেউ পুলিশের ওপর ককটেল মেরে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে যেন গুলি করে হলেও তাকে থামানো যায়।’
তিনি আরও ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ব্যাপারটা হচ্ছে, যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতে মাঠে কাজ করা পুলিশেরও নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। অতীতেও এ ধরনের রাজনৈতিক জ্বালাও-পোড়াওয়ের সময় অন্যতম “টার্গেট” হয়েছিল পুলিশ। সেই প্রেক্ষাপট থেকে পুলিশ সদস্যদের মনোবল চাঙ্গা করার জন্য স্যার এমন নির্দেশনা দিয়ে থাকতে পারেন।’
জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচারের রায় ঘনিয়ে আসায় ১০ থেকে ১৩ নভেম্বর বিক্ষোভ ও ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি দেয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা থাকা আওয়ামী লীগ। এই কর্মসূচি ঘিরে ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস ও ট্রেনে আগুন দেয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।
পরে শেখ হাসিনার মামলার রায় সোমবার ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছে। দিনটি ঘিরে আওয়ামী লীগ অনলাইনে রোববার থেকে দুই দিন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। শনিবার রাত থেকেই ঢাকাসহ কয়েকটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুনের ঘটনাও ঘটে।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে কয়েকটি ‘টার্গেট কিলিংয়ের’ পর নগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন। ১১ নভেম্বর বেতার বার্তায় এই নির্দেশ দেন সিএমপি কমিশনার।
এর পরদিন মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানায়। সংস্থাটি জানায়, দেশের সংবিধান যেকোনো নাগরিকের জীবনের অধিকার ও আইনের আশ্রয় পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। সন্দেহভাজন অপরাধীকেও আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া হত্যা বা গুলি চালানোর নির্দেশ ‘কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়’।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে