নেপালে আগুনে কি পুড়ল চর্যাপদও?
সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের দেয়া আগুনে নেপালের সিংহ দরবারে সংরক্ষিত চর্যাপদসহ মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের বিরল পাণ্ডুলিপিগুলো পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জল্পনা-কল্পনা চলছে বাংলাদেশ ও ভারতজুড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এই ধারণা থেকে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করছেন দুই দেশের বাঙালিরা।
তবে, এই দাবির সত্যতা এখনও নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত করা যায়নি। এছাড়া নেপালে চর্যাপদসহ প্রাচীন বাংলা পাণ্ডুলিপিগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কোনো যাচাইযোগ্য প্রমাণও মেলেনি।
বিশেষত ফেসবুকের পোস্টগুলোতে অভিযোগ করা হচ্ছে, জেনজিদের নেতৃত্বে নেপালে ছাত্রজনতার সাম্প্রতিক গণআন্দোলন চলাকালে রাজধানী কাঠমান্ডুর সিংহ দরবার কমপ্লেক্সের কিছু অংশে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এতে চর্যাপদ ছাড়াও আলাওল, শাহ মুহাম্মদ সগীর, দৌলত কাজী, কুরেশি মাগন ঠাকুর এবং প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় অন্যান্য লেখকদের বাংলা সাহিত্যকর্মের বিরল পাণ্ডুলিপিগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।
তবে বাস্তবতা থেকে বোঝা যায়, আলাওল, শাহ মুহাম্মদ সগীর, দৌলত কাজী, কুরেশি মাগন ঠাকুরসহ অন্য লেখকদের লেখকদের রচনা সেখানে সংরক্ষিত থাকলেও চর্যাপদের মূল তালপাতার পাণ্ডুলিপি সংরক্ষিত আছে নেপালের জাতীয় সংরক্ষণাগারে।
বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন হিসেবে চর্যাপদ এবং প্রাচীনতম জীবিত প্রমাণ হিসেবে শত শত বছর ধরে বিবেচিত হয়ে আসছে অন্য পাণ্ডুলিপিগুলো। বিশেষত হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো সে যুগের রহস্যময় বৌদ্ধ শ্লোকগুলোর সংকলন চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন। ১৯০৭ সালে নেপাল রয়েল কোর্ট লাইব্রেরিতে পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এর পুনঃআবিষ্কার করেন। দীর্ঘদিন ধরে এই আবিষ্কারকে বাংলা সাহিত্যের প্রাথমিক ইতিহাসের মাইলফলক হিসেবেও বিবেচনা করে আসছেন পণ্ডিতরা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে