Views Bangladesh Logo

গৌরব, অশ্রু আর বিজয়ের বার্তা নিয়ে এলো ডিসেম্বর

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

ছর ঘুরে আবারও ফিরে এসেছে ডিসেম্বর—বাঙালি জাতির গর্ব, অর্জন, অশ্রু ও বিজয়ের মাস। ডিসেম্বর মানেই স্মৃতি, বেদনা, আত্মত্যাগ আর স্বাধীনতার মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠা এক ইতিহাস।

আজ গৌরবের ডিসেম্বরের প্রথম দিন। মৃদু শীতের আমেজে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে উত্তরের হাওয়া। রাজনীতি, সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্য, সংবাদমাধ্যম ও অন্তর্জাল—জাতীয় জীবনের প্রতিটি স্তরেই লাল-সবুজের আলোয় উদ্ভাসিত হওয়ার অপেক্ষায় এই মাস।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয় ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। দীর্ঘদিনের স্বাধিকারের আন্দোলন সেই মাসেই চূড়ান্ত রূপ পায়। বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম নেয় নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র—বাংলাদেশ।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়া সত্ত্বেও পূর্ব বাংলার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে ২৩ বছর ধরে চলেছে সংগ্রাম। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছয় দফা, গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন—সবকিছুই পথ দেখিয়েছে বাঙালির মুক্তির আন্দোলনকে।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এরপর ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চালায় নৃশংস গণহত্যা—‘অপারেশন সার্চলাইট’। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ নারীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। তবে বিজয়ের ঠিক আগের দিনগুলোতে সংঘটিত হয় বাঙালি জাতির অন্যতম শোকাবহ ঘটনা—১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে এই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

লেখক যতীন সরকার তার ‘পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু-দর্শন’ বইয়ে লিখেছেন, সেই রাতে আকাশবাণীর খবরে শুনেছিলেন মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, গিয়াসুদ্দিন আহমদ, সন্তোষ ভট্টাচার্য, শহীদুল্লাহ কায়সারসহ বহু বুদ্ধিজীবীর শহীদ হওয়ার সংবাদ।

অন্যদিকে মঈদুল হাসান তার বহুল আলোচিত বই ‘মূলধারা ‘৭১’-এ উল্লেখ করেছেন, কীভাবে বৈপ্লবিক রাজনৈতিক উপাদান ও জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ ডিসেম্বরের মুক্তিযুদ্ধকে ‘অকল্পনীয় গতিময়তা ও শক্তি’ দিয়েছিল।

কর্মসূচি
প্রতি বছরের মতো এবারও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে বিজয়ের মাস। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো পালন করবে নানা অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৪ ডিসেম্বর পালন করা হবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস।

বিজয়ের মাস উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে মাসব্যাপী যাত্রাপালার প্রদর্শনী চলবে। দেশের বিভিন্ন যাত্রাদলের অংশগ্রহণে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হবে এসব প্রদর্শনী, যা চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ