Views Bangladesh Logo

বর্জন ঘোষণার পর সহ-উপাচার্যকে ছাড়াই চবি ইতিহাস বিভাগের অনুষ্ঠান

হীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বর্জনের ঘোষণার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানকে ছাড়াই ইতিহাস বিভাগের নবীনবরণ ও প্রবীণ বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকালে ইতিহাস বিভাগের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে সহ-উপাচার্যের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তবে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং তাকে বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আগেই অবস্থান নেন বিভাগের বিদায়ী শিক্ষার্থীরা। ফলে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিদায়ী ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেননি। পরে বিভাগ থেকে জানানো হয়, সহ-উপাচার্য অনুষ্ঠানে থাকছেন না। এরপর বিদায়ী শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

এর আগে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে সহ-উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেন ইতিহাস বিভাগের বিদায়ী ব্যাচ ‘হৃদয়ে উদ্দীপ্ত-৫৫’-এর শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তাকে বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। সোমবার এই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইতিহাস বিভাগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সত্য ও নৈতিক ইতিহাসচর্চার প্রশ্নে আপসহীন। সহ-উপাচার্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে সাফাই গেয়েছেন, যা ‘ধৃষ্টতাপূর্ণ ও চরম অবমাননাকর’। তার উপস্থিতিতে ইতিহাস বিভাগের কোনো অনুষ্ঠান কাম্য নয় বলেও উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইতিহাস বিভাগ কেবল একটি একাডেমিক পরিসর নয়; এটি মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের স্মৃতিবাহী। এই বিভাগ থেকেই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন আবদুর রব ও ফরহাদ উদ-দৌলা। তাদের রক্তে রঞ্জিত ইতিহাস বিকৃত করার যেকোনো প্রচেষ্টা বিভাগের নৈতিক অবস্থানের পরিপন্থী।

ইতিহাস বিভাগের ৫৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকসুলভ পদে বসে সহ-উপাচার্যের এমন বক্তব্য তীব্রভাবে নিন্দনীয়। তিনি অনুষ্ঠানে অতিথি থাকায় আমরা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পরে জানানো হয় তিনি আসছেন না, তখনই আমরা অংশ নিই।

এ বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীম হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন বলে ফোন কেটে দেন। অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা প্রভাষক মো. নুরুল হামিদের সঙ্গেও একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এদিকে সহ-উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদে পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরাও। তারা বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানান।

উল্লেখ্য, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশ ছাড়ার সময় বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিষয়টি তার কাছে ‘অবান্তর’ মনে হয়। তবে ওই সভায় উপস্থিত বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতা অধ্যাপক মোহাম্মদ আল আমিন এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবেই জাতিকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ