সনদ বাস্তবায়নে কমিশন কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে না: আলী রীয়াজ
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের দেয়া মতামতের ওপর আলোচনা করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে সকাল সোয়া ১১টার পর এই আলোচনা শুরু হয়। বিএনপি, জামায়াত, এন সি পি সহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল এতে অংশগ্রহণ করে।
সূচনা বক্তব্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘জুলাই সদন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো কিছু চাপিয়ে দেয়া হবে না। বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা কমিশনের কাছে নেই। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন সরকারকে জানাতে পারে। আমরা সেই পক্রিয়াটা অনুসরণ করছি।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘সর্বশেষ আলোচনায় নোট অফ ডিসেন্টসহ কিছু কিছু জায়গায় আমার একমত হতে পেরেছিলাম। তার একটি খসড়া আমরা আপনাদের (রাজনৈতিক দলগুলো) দিয়েছিলাম, আপনারা মতামত দিয়েছেন। অঙ্গীকার নামার বিষয়ে বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে। আশা করছি চূড়ান্ত খড়সা বিকাল নাগাদ পৌঁছে দেয়া যাবে।’
তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার নিয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি প্যানেল করে আমরা একাধিকবার আলোচনা করেছি। এই প্যানেলে দুইজন সাবেক বিচারপতি, তিনজন আইনজীবী, একজন আইনের শিক্ষক ছিলেন। প্যানেলে আলোচনার একপর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে যোগ দিতে বলেছিলাম, তিনি যোগ দিয়েছিলেন। আইন উপদেষ্টাও একটা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞ প্যানেল ও রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে বুঝতে পেরেছি জুলাই সনদের কিছু কিছু বিষয় অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি বিশেষজ্ঞ প্যানেল এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সরকারকের কাছে সুপারিশ করতে।’
এর আগে দুই পর্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। সেখানে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। এই সনদের খসড়া ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করেছে কমিশন।
তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও আইনগত ভিত্তি নিয়ে দলগুলো মতপার্থক্য থেকে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয় কমিশন। বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক–অনানুষ্ঠানিক একাধিক বৈঠক করেছে ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে দলগুলোর কাছ থেকে লিখিত মতামতও নেওয়া হয়েছে।
এসব মতামত সমন্বয় করে গত রবিবার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে ঐকমত্য কমিশন। সেখানে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়, সংবিধান–সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ জারির সুপারিশ করা হবে। এটিই সনদ বাস্তবায়নের সবচেয়ে ভালো বিকল্প। আর সংবিধান–সম্পর্কিত নয়, এমন প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হবে অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে