Views Bangladesh Logo

দেশের সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

দেশজুড়ে সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি। ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা, যা প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সাকিবুল হক লিপুর ঘোষিত সমন্বিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ।

এই আন্দোলন তিনটি মূল দাবিকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল, যার লক্ষ্য প্রকৌশল খাতে নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পেশাগত স্বীকৃতির সংস্কার। বুধবার (২৭ আগস্ট) রাতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার সশয় লিপু জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, তবে জনদুর্ভোগ কমাতে মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম সীমিত রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেল ৫টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।

প্রধান দাবি অনুযায়ী, নবম গ্রেডের প্রকৌশলী বা সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগের জন্য সকল প্রার্থীর বাধ্যতামূলক ভর্তি পরীক্ষা চালুর দাবি জানানো হয়েছে। আন্দোলনকারীরা জোর দিয়ে বলেছেন, এই পদে নিয়োগের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। তারা কোটা ভিত্তিক পদোন্নতি এবং ভিন্ন নামে সমমানের পদ সৃষ্টির বিরোধিতা করছেন।

দ্বিতীয় দাবিতে বলা হয়েছে, দশম গ্রেডের টেকনিক্যাল বা সমমানের পদ—যেমন উপসহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষায় বিএসসি ও ডিপ্লোমা উভয় ধরনের ডিগ্রিধারীদেরকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।

তৃতীয় দাবিতে বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ “ইঞ্জিনিয়ার” পদবি ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন বিভাগের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাস প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে।

একত্রিত হয়ে এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন বুয়েট, চুয়েটসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরাও। তারা ডিপ্লোমাধারীদের “ইঞ্জিনিয়ার” পদবি ব্যবহারের তীব্র বিরোধিতা করছেন।

শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এর মাধ্যমে তারা ঢাকায় পূর্ববর্তী আন্দোলনে পুলিশের নির্যাতনের প্রতিবাদও জানান।

বুধবার ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে মিছিল করতে গেলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে। এতে বহু শিক্ষার্থী আহত হন এবং তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় বলে জানান প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. সাব্বির আহমেদ।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, ওই সংঘর্ষে তাদের অন্তত আটজন সদস্যও আহত হয়েছেন।

বুধবার রাত ১০টার দিকে শাহবাগে ১২ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন যখন ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন ডিএমপি কমিশনার এস এম সাজ্জাত আলী। সে সময় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পুলিশের ব্যবহারের ঘটনাকে “দুঃখজনক” বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জবাবে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, তারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন কোনো কর্মসূচি আর চালাবেন না, তবে সরকারের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাবেন যাতে তাদের দাবি পূরণ হয়।

পুলিশের এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।

প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন জানিয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ ও আইনগত উপায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন যতক্ষণ না তাদের দাবি বাস্তবায়িত হয়।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ