গল টেস্ট
মুশফিক-শান্তর সেঞ্চুরিতে রাঙা দিন
সকাল সব সময় পুরো দিনের গল্প বলে না। শ্রীলঙ্কার গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে সেটিই দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। তাদের জোড়া সেঞ্চুরিতে দেশটির বিপক্ষে প্রথম ইনিংসকেও তিনশর কাছাকাছি টেনে নিয়েছেন টাইগাররা।
গলে বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্গ হয়েও দাঁড়িয়ে আছেন মুশফিক-শান্ত। মঙ্গলবার (১৭ জুন) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাঁচ দিনের টেস্টের প্রথমদিনে দুজনেই দীর্ঘদিন পর পেয়েছেন শত রানের দেখাও। তাদের ব্যাটে চড়ে ২৯২ রানে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে লঙ্কানদের বোলিং ব্যর্থতার দিনে দুটি সাফল্য যোগ হয়েছে অভিষেক হওয়া থারিন্দু রাথানায়েকের। সকালে আশিথা ফার্নান্দো পেয়েছিলেন এনামুলের উইকেট। এরপর সারাদিনে আর উইকেট উদযাপন করতে পারেননি স্বাগতিকরা।
এভাবেই জোড়া সেঞ্চুরিতে রাঙা দিনে সফরকারী টাইগাররা হারিয়েছেন তিন উইকেট। লঙ্কানদের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত শুরুর দিকে ভুল প্রমাণ করেছিলেন টপ অর্ডারের ওই তিন ব্যাটার। ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে এনামুল হক বিজয় ফেরেন শূন্য রানে। দলকে হতাশ করে ফেরেন পরের দুই ব্যাটারও।
ফলে বিকালের মতো এতো উচ্ছ্বাস সকালে ছিল না বাংলাদেশের। রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেছিলেন এনামুল। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ১৪ রানে ফেরেন সাদমান ইসলাম। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর জুটি গড়তে লড়া মুমিনুল (২৯) ফেরেন ওয়ানডে স্টাইলে খেলে। ইনিংসের শুরুর ১৬.১ ওভারের মাঝে তিন টপ অর্ডার হারিয়ে যখন বিপাকে টাইগাররা তখন ত্রাতা হয়ে দাড়ান মুশফিক-শান্ত। দুজনের ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে প্রথম সেশনের চাপ সামলে ওঠে বাংলাদেশ। পরের সেশনেও দারুণ ব্যাটিং করেন দুজন। তৃতীয় পর্যায়ে দেখান চমকও। দুজনের ব্যাটেই আসে শতরান। জুটিটি এখনও ২৪৭ রানে অবিচ্ছিন্ন।
বুধবার (১৮ জুন) টেস্টের দ্বিতীয় দিন ১৩৬ রান থেকে শুরু করবেন টাইগার অধিনায়ক শান্ত। গলের সুখস্মৃতি নিয়ে নামা ১০৫ রান থেকে মুশফিকও বাড়িয়ে নেবেন দীর্ঘদিন পর সেঞ্চুরিতে মাতার সুখ।
গত বছরের আগস্টে রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রান করেছিলেন মুশফিকুর। পরের ১৩ ইনিংসে চলছিল তার রানখরা।
এমনকি ফিফটিও পাননি, সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৪০ রান। অবশেষে গলে রাজা হয়ে ফিরলেন সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ১২তম সেঞ্চুরি করা মি. ডিপেন্ডঅ্যা্বল।
লম্বা এই জুটিতে শান্ত পেয়েছেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরির দেখা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র শুরুর ম্যাচে নেতার মতোই টেনেছেন দলকে। সবশেষ ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর ঘরের মাঠে নিউজল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৫ রান করেছিলেন শান্ত। এর বছর দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে সাদা পোশাকে তিন অঙ্কের সুখ পাননি, কাটিয়েছেন রানখরাও।
গলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। টেস্টে চতুর্থ উইকেটে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় দুশ’ ছাড়ানো জুটি। ২৬৬ ও ২২২ রানের প্রথম দুটি জুটিই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ওই দুটিতেও ছিলেন মুশফিক। আজকের জুটি কাল গলের রেকর্ডও ভেঙে দিতে পারে। মুশফিক-শান্তও নিশ্চয় সেটি চাইবেন!
৪৫/৩ থেকে ২৯২/৩ -এ আসা দুই ব্যাটার আপাতত রাজত্ব করছেন গলে। কাল যতক্ষণ সেই রাজ্যপাট চলবে, ততই টেস্টটি বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকে যাবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে